ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা, গ্রেফতার ৪
৭ মে ২০১৯ ১৭:১৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর ধনাঢ্য এক ব্যবসায়ীকে কৌশলে একটি বাসায় জিম্মি করে মুক্তিপণের টাকা আদায় করার সময় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ মে) ভোর পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পেশাদার এই অপরাধী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। এর আগে সোমবার সন্ধ্যা থেকে অভিযান শুরু হয়।
গ্রেফতার চারজন হলেন, মো. নাসির উদ্দিন (৩৫), প্রদীপ দাশ (৩৫), হাসিনা আক্তার প্রকাশ মুক্তা (৪৫) ও ছালেহা আক্তার (৪০)। বিকাশ এজেন্টের কাছে মুক্তিপণের টাকা আনতে গেলে এদের মধ্যে প্রথমে হাসিনা আক্তারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয় আরও তিনজনকে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে জানান, সোমবার দুপুরে নগরীর আছাদগঞ্জ শুটকি পট্টি এলাকার ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন (৫০) অপহরণের শিকার হন। তাকে চামড়ার গুদাম এলাকা থেকে নাসির, প্রদীপসহ তিনজন জোর করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে চান্দগাঁও এলাকায় যায়। সেখান থেকে আলতাফ হোসেনকে নগরীর চান্দগাঁও থানার শরাফত উল্লাহ পেট্রল পাম্পের পাশে নূর মঞ্জিল নামে একটি ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে নেওয়া হয়। সেখানে তার গলায় বটি ধরে মেরে ফেলার হুমকি দেয় হাসিনা ও তার সহযোগীরা। এরপর ব্যবসায়ীর আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। অপহরণকারীরা হুমকি দেয়, ৪ লাখ টাকা না দেওয়া হলে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এতে আতঙ্কিত হয়ে আলতাফ হোসেন তার ভাইকে বিকাশ নম্বর দিয়ে টাকা পাঠাতে বলেন। বিষয়টি কোতোয়ালী থানায় জানানো হলে সোমবার দুপুরে অভিযানে নামে পুলিশ। নগরীর চান্দগাঁও থানার কামালবাজার এলাকায় তাহেরিয়া ফ্যাশন নামে একটি বিকাশ এজেন্টের কাছে হাসিনা টাকা তুলতে (ক্যাশ আউট) গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নূর মঞ্জিল থেকে নাসির ও প্রদীপকে গ্রেফতার করা হয়, জানান মোহাম্মদ মহসীন।
তিনি বলেন, নূর মঞ্জিলে অভিযানের সময় এক নারীসহ দু’জন পালিয়ে যায়। পরে নগরীর চামড়ার গুদাম এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত ছালেহাকে গ্রেফতার করি আমরা। হাসিনা আক্তার দাবি করেছেন, আলতাফ হোসেনের সঙ্গে তার ২০০৭ সাল থেকে পরিচয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে হাসিনা তাকে ফোন করলে আলতাফ চান্দগাঁওয়ের ওই ফ্ল্যাটে যান।
কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, “গ্রেফতার চারজন একটি সংঘবদ্ধ পেশাদার অপরাধী চক্র। তারা দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের অপরাধ করে আসছে। এই পর্যন্ত নগরীতে অন্তত ৫০টি একই ধরনের অপরাধ তারা সংঘটিত করেছে। কিন্তু কোনো থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি।“
সারাবাংলা/আরডি/এটি