পাকিস্তান ছেড়ে ‘কানাডায়’ সেই আসিয়া বিবি
৮ মে ২০১৯ ১৩:৫৮
ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়ার পর এবার পাকিস্তান ছেড়েছেন খ্রিস্টান নারী আসিয়া নরেন। তিনি গণমাধ্যমে আসিয়া বিবি নামে বেশি পরিচিত।
আসিয়ার আইনজীবী সাইফ উল মালুক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানান, পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে আসিয়া কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন।
এদিকে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ আসিয়া বিবির দেশত্যাগের কথা নিশ্চিত করলেও কোন দেশে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন সে ব্যাপারে মুখ খুলেনি।
এর আগে আসিয়ার পরিবার জানিয়েছিল তারা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন। কারণ পাকিস্তানে তাদের ঝুঁকি নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আসিয়া পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। ২০০৯ সালে তার বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগটি উঠে। জানা যায়, খামারে কাজ করার সময় তার সঙ্গের এক মুসলিম শ্রমিকের গ্লাস ব্যবহার করে পানি খেয়েছিলেন আসিয়া। এতে তার সহকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ও তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বলে। আসিয়া অস্বীকৃতি জানালে মুসলিম শ্রমিকদের সঙ্গে আসিয়ার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরবর্তীতে শ্রমিকরা অভিযোগ করে জানান, আসিয়া ইসলাম ধর্মের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর কথা বলেছে।
২০১০ সালে নবীকে ‘কটূক্তি’ করার দায়ে পাঁচ সন্তানের জননী আসিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। ধর্ম অবমাননা সংক্রান্ত আইনে প্রথম নারী হিসেবে আসিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সালে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসিয়া।
গত বছরের অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট আসিয়ার দণ্ড মওকুফ করে জানায়, আসিয়া বিবির বিরুদ্ধে অভিযোগের পর্যাপ্ত সত্যতা পাওয়া যায়নি। সে বছরের ৭ ই নভেম্বর মুক্তি দেওয়া হয় তাকে।
পাকিস্তানে বিতর্কিত ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার শাস্তি হচ্ছে, হয়তো ফাঁসি অথবা নয়তো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। নিন্দিত এই আইনটি দেশটিতে সংখ্যালঘু ভিন্ন ধর্মের লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। আসিয়ার শাস্তি নিয়ে শুরু থেকেই দ্বিধা বিভক্ত ছিলো পাকিস্তানের মুসলিম সমাজ। তবে প্রকাশ্যে অনেকেই একথা বলার সাহস পায়নি।
আসিয়ার মুক্তির পর পাকিস্তানের কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতারা দেশজুড়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছেন।
সারাবাংলা/এনএইচ