আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় লোকসানের ঝুঁকিতে নারায়ণগঞ্জের লিচু চাষীরা
৯ মে ২০১৯ ০৭:২৭
খরা, ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে এ বছর ফলন ভালো না হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের লিচু চাষী ও ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে প্রচণ্ড গরমে সোনারগাঁওয়ের বিখ্যাত লিচু পাকতে শুরু করেছে, বাজারেও টুকটাক বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে বলে আশা করছেন তারা।
পানাম গাবতলী গ্রামের লিচু ব্যবসায়ী ইসমাইল মেম্বার লিচুর ফলন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা লিচুর ফলন না দেখেই বাগান মালিকের কাছ থেকে অগ্রিম গাছ ক্রয় করে থাকি। লিচু ব্যবসায়ীরা ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে লিচু ব্যবসা করে।’
লিচু বাগানী মুকুল মিয়া জানান, ‘এ বছর ফলন ভালো হয়নি। অতিরিক্ত খরা, ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে বাগানের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবার তুলনামূলকভাবে সোনারগাঁওয়ের লিচুর দাম বাড়তি থাকবে।’
তবে সোনারগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মণিকা আক্তার জানান, ‘সোনারগাঁওয়ে লিচু চাষের জন্য মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী হলেও এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লিচুর গুঁটি গাছ থেকে ঝরে পড়েছে। তাই এ বছর সোনারগাঁওয়ের লিচুর ভালো ফলন হয়নি।’
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, লিচু বাগানকে ঘিরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা। গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে ঝুলন্ত লাল টকটকে লিচু। কাক ও বাদুড়ের উপদ্রব ঠেকাতে গাছে গাছে ইলেকট্রিক বাতি, বাঁশ ও টিনের তৈরি বাজনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া সারারাত জেগে বাগান পাহারা দিচ্ছেন অনেকে।
সোনারগাঁওয়ের লিচু আকারে বড়, সুস্বাদু ও আগাম বাজারে আসে বলে দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় এই লিচুর চাহিদা বেশি। কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচী, পাতি এই পাঁচ ধরণের লিচুর চাষ হয় এখানে। প্রতি বছর একেকটি গাছ চার থেকে পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। অন্যান্য জাতের লিচুর তুলনায় কদমী জাতের লিচু সহজে চাষযোগ্য ও লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে কদমী চাষেই বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন চাষীরা।
বাগানের মালিকেরা আশা করছেন, এ বছর কদমী লিচু বিক্রি হবে প্রতি শ’ ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। আর পাতি লিচু বিক্রি হবে প্রতি শ’ ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়।
সারাবাংলা/ওএম/আরএ