দুর্নীতির মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কারাদণ্ড
১০ মে ২০১৯ ০১:৩৬
ঢাকা: জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন এবং তা দখলে রাখার অভিযোগে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন প্রশাসনিক ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগে তার স্ত্রীকেও তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকার পাচঁ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। তবে এ দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, হাইকোর্টের বিভাগের কোর্ট কিপার শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. গোলাম ফারুক ও তার স্ত্রী মিসেস সৈয়দা মমতাজ বেগম।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় আসামি মো. গোলাম ফারুককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৭০ লাখ ৫১ হাজার ২৯৬ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। একই সাথে তার স্বামীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২)/ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অর্জিত সম্পদ বেনামদার হিসেবে দখলে রেখে স্বামীকে অপরাধে সহযোগিতা করার অপরাধে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এ দুইজনের অর্থদণ্ডের টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে আদায়ের নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) অন্য আরেকটি ধারায় আসামি মো. গোলাম ফারুক কর্তৃক জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ নিজ দখলে রাখার অপরাধে তাকে আরও ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আর তাদের এ দণ্ড একটির পর অপরটি কার্যকর হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
মামলার অভিযোগ বলা হয়, আসামি গোলাম ফারুককে দুদক সম্পদের বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিলে তিনি তা দাখিল করেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দুদক দেখে গোলাম ফারুক তার নিজ নামসহ দুই স্ত্রীর নামে সর্বমোট ৩ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের হিসাবসহ দায় হিসেবে মোট ১ কোটি ২৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে বলে দাখিল করে।
এতে তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি ৯৯ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা। আসামি গোলাম ফারুক নিজ নামে ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সৈয়দা মমতাজের নামে মোট ৬১ লাখ টাকার জমি অর্জন করেন মর্মে বিবরণীতে উল্লেখ করেন। অথচ তিনি ৭৩ লাখ ৮২ হাজার ৮০৩ টাকা বিনিয়োগ করে অর্জন করেন। এতে তিনি ১২ লাখ ৮২ হাজার ৮০৩ টাকা মিথ্যা ও ভিত্তিহীণ তথ্য গোপন করেন। গোলাম ফারুক তার স্ত্রী মমতাজের নামে হাজারীবাগের রায়ের রাজার ছয় নং রোডে সিকদার রিয়েল এস্ট্রেটে আড়াই কাঠা জমির ওপর ছয় তলা বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই জমি তিনি এক লাখ টাকা মূল্যে তার স্ত্রীর নামে ক্রয় করেন। এতে তিনি ৪৯ লাখ টাকা খরচ করে বাড়ি নির্মাণ করেন বলে বিবরণীতে উল্লেখ করেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে এক কোটি ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৩ লাখ ব্যয় করেন মর্মে দেখা যায়।
২০১২ সালের ১৪ জুন দুদকের উপপরিচালক মোজাহার আলী সরদার আসামিদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং আর এতে তাকে সাহায্য করার অভিযোগে স্বামী-স্ত্রী বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
২০১৩ সালের ২ জুন মাসে এ তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।
সারাবাংলা/এআই/এমআই