প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে দ্রুত আইন প্রয়োগের ঘোষণা বন উপমন্ত্রীর
১১ মে ২০১৯ ১৯:৩২
ঢাকা: প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার দ্রুতই সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিযায়ী পাখি বা অতিথি পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল গড়ে তোলার লক্ষ্যে আইন প্রয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার (এমপি)।
শনিবার (১১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশ্ব পারিযায়ী দিবস-২০১৯ উপলক্ষে ‘পাখি দূষণে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু রক্ষায় ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য আমাদের উচিত বেশি করে গাছ লাগানো ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের অন্যতম একটি ইশতেহার ছিল আমার গ্রাম, আমার শহর প্রকল্প। এই প্রকল্পের মূল উপজীব্য হলো গ্রামেও শহরের সেবা ও সুবিধা প্রদান করা। আর এক্ষেত্রে আমাদের গ্রামের পরিবেশ রক্ষাই হচ্ছে অন্যতম গুরুত্বের বিষয়, আর সেক্ষেত্রে গাছ লাগানো ও জলাশয় রক্ষাই আমাদের মূল কাজ।’
পাশাপাশি বর্জ্য নিরসন ও নিঃসরণের জন্য বিভিন্ন জায়গায় বর্জ্য নিষ্কাষণের ব্যবস্থা করা হবেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। বাংলাদেশেও পাখিদের আবাসস্থল নষ্ট ও চোরা শিকারিদের কারণে অনেক পরিযায়ী পাখিই আজ হারিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অধিক পরিমাণে প্লাস্টিক বর্জ্যের ব্যবহার। বাংলাদেশে মাত্রাতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহারের কারণে পরিযায়ী বা অতিথি পাখিদের আবাস্থল, বিশেষ করে নদী, খাল বা হাওড়ের পানিতে প্লাস্টিক বর্জ্যের আধিক্যের কারণে এসব পাখিরা মারা যাচ্ছে। পরবর্তীতে আর এরা বাংলাদেশে আসছে না। এতে বাংলাদেশের জীব বৈচিত্র্য ও হাওড়ের জলবায়ুর ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে ও পরিযায়ী পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থলের লক্ষ্যে আমাদের আইনের প্রয়োগে আরও কঠোর হওয়া উচিত।’
বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড গুলশান আরা লতিফা বলেন, ‘প্লাস্টিক রোধে আমাদের বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা সময়ের দাবি হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রথমেই আমাদের প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি নদী-নালা, খালবিল ও জলাশয়ের তীরভূমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, পরিত্যক্ত বর্জ্য যথা নিয়মে ধ্বংস করা ও প্লাস্টিকের পুনঃব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
উল্লেখ্য, পরিযায়ী পাখিদের সব প্রতিকূলতাকে দূরে ঠেলে বিশ্বে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে ২০০৬ সাল থেকে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালন করা শুরু হয়। সেজন্য প্রতি বছর ১০ ও ১১ মে দিন দুটিকে নির্ধারণ করা হয়েছে।
বন অধিদফতরের উপপ্রধান বন সংরক্ষক জহির উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, বন অধিদফতরের কমিটির সদস্য মো রাকিবুল আমিনসহ অনেকে।
সারাবাংলা/ওএম/এমআই