ঢাবিতে আবৃত্তি সংসদ খুলে লাখ টাকা আদায়ের ফন্দি!
১১ মে ২০১৯ ১৯:৫২
ঢাবি: শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়ার কথা বলে লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের বিরুদ্ধে। এছাড়া অনুমোদন না থাকার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সংসদের নামে একটি কক্ষ দখল করে রাখা হয়েছিল। পরে অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অফিসটি সিলগালা করে দিয়েছে।
জানা যায়, গত ১৮ এপ্রিল আবৃত্তি সংসদের সদস্য সংগ্রহের জন্য মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ এপ্রিল মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ওই পরীক্ষার পর ২৩৮ জনকে সংসদের সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। এর মধ্যে ৫৯ জন অনুশীলন পর্বের, আর কর্মশালা পর্বের জন্য ১৭৯ জন।
এরপর ২ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কর্মশালা পর্বের প্রত্যেকের ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়। যা মে মাসের ১০ তারিখ বা কর্মশালা শুরুর আগেই দিতে বলা হয়।
এছাড়া অনুশীলন পর্বের সদস্যদের জন্য ধার্য করা হয় ২০০ টাকা ফি।
এই হিসেবে কর্মশালা পর্বের সদস্যদের কাছ থেকে ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা এবং অনুশীলন পর্বের সদস্যদের কাছ থেকে ১১ হাজার ৮০০ টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবৃত্তি সংসদের এক সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে আবৃত্তি সংসদ, অথচ সেখানে টাকা দিয়ে কোর্স করতে হবে এটি গ্রহণযোগ্য নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক স্যার এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক তানজীন আল আমিন। এর যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল হাসান আরিফ। সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌমিত্র শেখরকে, আর একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম হন মডারেটর।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি আদায়ে বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের আহ্বায়ক তানজীন আল আমিন বলেন, ‘আমরা ১৪টি ক্লাস নেব। শিক্ষকদের বেতন দিতে হবে। এজন্য ফি ধার্য করা হয়েছে।’
এসময় তিনি আবৃত্তি সংসদ বাবদ তার নিজের পকেট থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান। ৪০ হাজার টাকা কোথায় পেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মা মোটরসাইকেল কেনার জন্য টাকা দিয়েছিলেন। সংগঠনের ব্যয় নির্বাহে সে বাইক আমি কিনিনি।’
শিক্ষার্থীদের কাছে ফরম বিক্রির বিষয়ে সংগঠনের মডারেটর ড. মোহাম্মদ আজমকে সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওরা তো ফরম ফ্রি দিয়েছে।’ তবে কর্মশালার ফি নির্ধারণ বিষয়ে আবৃত্তি সংসদের আহ্বায়কের সঙ্গে এখনো আলাপ হয়নি বলেও জানান তিনি।
এর আগে, অন্তত ৫০০ শিক্ষার্থীর কাছে আবৃত্তি সংসদ ফরম বিক্রি করে। প্রতিটি ৫ টাকা হিসেবে ফরম বিক্রি বাবদ তারা ২ হাজার ৫০০ তুলেছে। যদিও ফরম বিক্রি বাবদ টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম ছিল না।
সারাবাংলা/কেকে/এমও
আবৃত্তি সংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ