ডিজিটাল হচ্ছে সিলেট বেতার কেন্দ্র
২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ১২:০৩
জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: আধুনিক হচ্ছে বাংলাদেশ বেতারের সিলেট কেন্দ্র। এর মধ্য দিয়ে ডিজিটাল সম্প্রচারের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই বেতার কেন্দ্রে। ফলে উচ্চ কারিগরি মানসম্পন্ন বেতার অনুষ্ঠান শুনতে পারবে সিলেটবাসী। সেই সঙ্গে হাওর ও চা বাগান এলাকার অনগ্রসর মানুষের দোরগোড়ায় বেতারকে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এজন্য ‘বাংলাদেশ বেতার, সিলেট কেন্দ্র আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল সম্প্রচার যন্ত্রপাতি স্থাপন’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে তথ্য মন্ত্রণালয়। দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ৫৬ কোটি ২২ লাখ টাকা।
এই অর্থে একটি নতুন ২০ কিলোওয়াট ক্ষমতার আধুনিক ও ডিজিটাল মধ্যম তরঙ্গ ট্রান্সমিটারও পাবে সিলেট কেন্দ্র।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০ কিলোওয়াট ক্ষমতার মধ্যম তরঙ্গ ট্রান্সমিটার স্থাপিত হলে বিদ্যমান ২০ কিলোওয়াট ক্ষমতার ট্রান্সমিটারটি বিকল্প ট্রান্সমিটার হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ২০০২ সালে এটি স্থাপন করা হলেও সেটি আধুনিক না হওয়ায় এতদিন ৫ কিলোওয়াট থেকে ৮ কিলোওয়াট ক্ষমতায় পরিচালিত হয়ে আসছে বেতার কেন্দ্রটি।
১৯৬১ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা কেন্দ্রের অনুষ্ঠান রিলে করার মধ্য দিয়ে সিলেট কেন্দ্রের সম্প্রচার শুরু হয়। পরে ১৯৬৭ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে সিলেট কেন্দ্র নিজস্ব অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করে । ১৯৭০ সাল থেকে এটি পূর্ণাঙ্গ বেতার কেন্দ্রে রূপ নেয়।
পরে ১৯৮৭ সালের ২২ নভেম্বর নতুন ৯৬৩ কিলোহার্জ এ. এম. ট্রান্সমিটার স্থাপন করে সম্প্রচার শক্তিশালী করা হয় সিলেট কেন্দ্রের। ২০০২ সালে এখানে একটি ২০ কিলোওয়াট ক্ষমতার ট্রান্সমিটার বসানো হয়। ২০০৭ সালে ১ কিলোওয়াট ক্ষমতার ১০৫ মেগাহার্জ তরঙ্গের এফ এম ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সব কেন্দ্রের এফ এম সম্প্রচার শুরু হয়। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে আরেকটি ১০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৮৮ দশমিক ৮ মেগাহার্জ তরঙ্গের এফএম ট্রান্সমিটার বসে। ২০১৩ সালের জুন মাসে একটি ৫ কিলোওয়াট ক্ষমতার ৯০ মেগাহার্জ তরঙ্গের এমএম ট্রান্সমিটার বসিয়ে অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয়।
তবে ৩৮ বছর আগে স্থাপিত কেন্দ্রের ২০ কিলোওয়াট এনালগ ট্রান্সমিটারটি বর্তমানে অনেকাংশেই অচল। ট্রান্স মিটারটির আয়ুস্কাল উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় এনালগ পদ্ধতির এ ট্রান্সমিটারটি খুচরা যন্ত্রাংশ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এটি পূর্নক্ষমতায় পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ শেষ হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বেতার।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ বেতার, সিলেট কেন্দ্রের সম্প্রচার ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ডিজিটাইজেশন হবে। এতে আকর্ষনীয় ও উচ্চ কারিগরী মান সম্পন্ন বেতার অনুষ্ঠান সম্প্রচার নিশ্চিতের পাশাপিাশি মানসম্মত অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে বেতার সম্প্রচারকে সিলেটের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সিলেট অঞ্চলের শিক্ষার হার বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
প্রকল্পের আওতায় যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম সংগ্রহ, অন্যান্য ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণ এবং আসবাবপত্র ও অফিস সরঞ্জাম সংগ্রহ করাই হবে প্রধান কাজ।
সারাবাংলা/জেজে/জেএএম