Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আওয়ামী লীগে গুণ্ডাপাণ্ডার দরকার নেই’


১১ মে ২০১৯ ২৩:০৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী ঢোকার কথা স্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগে কোনো গুণ্ডাপাণ্ডার দরকার নেই। অনুপ্রবেশকারীদের দল থেকে বের করে দিতে হবে।

শনিবার (১১ মে) চট্টগ্রামের তিনটিসহ সাতটি সাংগঠনিক জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কথা বলেছেন। নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে দিনব্যাপী এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরু। সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

বিজ্ঞাপন

আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘আওয়ামী লীগে কোনো গুণ্ডাপাণ্ডার দরকার নেই। এই দলে নেতার অভাব নেই। যারা কাজ করবে না তাদের সংগঠনে দরকার নেই। রাজনীতি করতে হলে নিরহংকারী হতে হবে। প্রবীণ নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। নতুন কর্মী সংগ্রহের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। সমাজে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদের সদস্য করতে হবে।’

তিনি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সম্মেলনের প্রস্তুতি নেন। একটি কমিটি ১০-১২ বছর চলতে পারে না।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। দলে তাদের দরকার নেই। অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হবে। উদ্ধত আচরণ যেন না হয়। অনেক উন্নয়নের পরও যদি সংগঠনের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করেন, তাহলে জনগণ আপনাকে আপন করবে না। বিনয়ী হওয়ার বার্তা দেন সবাইকে। আর যারা উদ্ধত আচরণ করবে তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে সভাপতির বক্তব্যে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন সাংগঠনিক কমিটির সম্মেলন শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। তিনি বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইউনিয়ন-ওয়ার্ড, থানা, উপজেলা এবং জেলা সম্মেলন শেষ করতে হবে। নতুন করে কমিটি গঠন করতে হবে।’

বিশেষ বর্ধিত সভায় চট্টগ্রামের তিনটি সাংগঠনিক জেলা মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ এবং কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবন থেকে আসা নেতারা বক্তব্য রাখেন। তারা নিজ নিজ জেলার সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরনে।

এ প্রসঙ্গে সভাপতির বক্তব্যে হানিফ বলেন, ‘সাংসদের সঙ্গে অনেক উপজেলার সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের দূরত্ব রয়েছে। দূরত্ব মিটিয়ে ফেলেন। মঙ্গল হবে। সাংসদ হিসেবে যেসব বরাদ্দ আসে তা বিতরণে দলীয় নেতাকর্মীদেরও সম্পৃক্ত করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি ভরাডুবির কথা ভেবে আসেনি। তাই অনেক জায়গায় নৌকোর বিপক্ষে দলীয় প্রার্থী অংশ নিয়েছে। একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা ভেবে এই সুযোগ দেওয়া হয়। ভোটাররা যাতে নিজেদের পছন্দমতো প্রার্থী বাছাই করতে পারে। তবে দলের সাংসদ হয়ে নৌকার বিপক্ষের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়। তারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে অভিযুক্ত হবেন।’

পাহাড়ে আওয়ামী লীগ নেতার্কমীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন রাঙামাটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতাব্বর।

এ প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, ‘রাঙামাটির বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। সেটা সরকারও জানে।  এখানে শুধু আঞ্চলিক দলগুলাই সমস্যা নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতি রয়েছে এর পেছনে। সরকার এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

এর আগে সূচনা বক্তব্যে মাহবুবুল আলম হানিফ তৃণমূল পর্যায় থেকে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘দল এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয় দরকার। দলের নেতাকর্মীদের গঠনতন্ত্র জানতে হবে। পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে সম্মেলন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কথাও মাথায় রাখতে হবে।’

সভা সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম। এতে রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ দলের সংসদ সদস্যরাও বক্তব্য রাখেন।

সারাবাংলা/আরডি/এসবি

আ জ ম নাছির উদ্দীন আওয়ামী লীগ আবদুল মতিন খসরু এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ড. হাছান মাহমুদ তথ্যমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মাহবুব উল আলম হানিফ শিক্ষা উপমন্ত্রী হুইপ সামশুল হক চৌধুরী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর