নুসরাত হত্যায় মানি লন্ডারিং হয়নি: সিআইডি
১২ মে ২০১৯ ১৪:১৮
ঢাকা: ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সামান্য কিছু টাকা লেনদেন হলেও মানি লন্ডারিংয়ের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (১২ মে) রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত সিআইডি’র প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মোল্লা নজরুল ইসলাম এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন- নুসরাত হত্যার একমাস: দ্রুত বিচারের অপেক্ষায় স্বজনরা
পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল বলেন, মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত হত্যার ঘটনায় কোনো মানি লন্ডারিং হয়েছে কি না, তা নিয়ে আমরা তদন্ত করেছি। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, নুসরাত হত্যাকাণ্ডে মানি লন্ডারিং হয়নি। অল্প কিছু টাকা লেনদেন হয়েছে, তবে তা মানি লন্ডারিংয়ের পর্যায়ে পড়ে না।
মোল্লা নজরুল বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি, তাতে দেখা যায়— হত্যাকাণ্ডের আগে সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাকসুদ আলম অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলাকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। এই টাকা দিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বোরকা, হিজাব, কেরসিন ও দড়ি কেনা হয়েছিল। এছাড়া আর কোনো লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি আমরা আরও তদন্ত করে দেখছি।
এর আগে সিআইডি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নুসরাত হত্যায় কোনো মোটা অঙ্কের টাকা মানি লন্ডারিং হয়েছে কি না, তা বের করতেই সিআইডি ঘটনাটি তদন্ত শুরু করেছে। মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে অর্থ জালিয়াতির মামলাও দায়ের করা হবে।
এর আগে, নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে কারাগার থেকেই তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নুসরাতের পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন। তাতে নুসরাত ও তার পরিবার রাজি না হলে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন অধ্যক্ষ। সেই অনুযায়ী, গত ৬ এপ্রিল নুসরাত তার মাদরাসায় পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। সেখানে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিন রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নুসরাতের চিকিৎসা চলে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় নুসরাত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর