Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্ধারিত সময়ে হচ্ছে না ‘আবরার আহম্মেদ ফুটওভার ব্রিজ’


১২ মে ২০১৯ ১৯:২৪

ঢাকা: ঘোষণা দেওয়ার দেড়মাস পর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না আবরার আহম্মেদ ফুটওভার ব্রিজের কাজ। রাজধানীতে বাস চাপায় নিহত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রোফেশনালস (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহম্মেদের নামে ওই ফুটওভারব্রিজটি উদ্বোধন করা হয় গত ২০ মার্চ।

এর আগে গত ১৯ মার্চ রাজধানীতে সুপ্রভাত বাসের চাপায় নিহত হন বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার আহম্মেদ চৌধুরীর। এর পরদিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মার্চ রাজধানীর প্রগতি সরণিতে একটি ফুটওভারব্রিজ নির্মার্ণের ঘোষণা দেওয়া হয়। আবরারের বাবা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহাম্মেদ চৌধুরীর পক্ষে এই ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তরটি স্থাপন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনকালে মেয়র আতিকুল ইসলাম দুই মাসের মধ্যে এটির নির্মাণ কাজ সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘এক মাসের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজটির কাঠামো দৃশ্যমান হবে।’

তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মূল ফটক আর যমুনা ফিউচার পার্কের মূল ফটকের ঠিক মাঝামাঝি স্থানে ফুটওভারব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। রমজানের প্রথম দিন নির্মাণ কাজ শুরু হলেও কাজ চলছে ধীর গতিতে। সড়কের দুপাশের ফুটপাতে গর্ত খোঁড়া ও অল্পকিছু পিলার স্তুপ করে রাখা ছাড়া কাজের উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।

নির্মাণ কাজে সম্পৃক্ত এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এখনো এটির কাজ পুরোদমে শুরু হয়নি। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও নির্মাণ সামগ্রিও এসে পৌঁছায়নি। মাঝখানে ইদের ছুটিতে পর্যাপ্ত শ্রমিকও থাকবে না। তাই আগামী দুই মাসের মধ্যে এটির কাজ শেষ হবে কি-না, সেটাও এখনই বলা যাচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

কাজ দেরিতে শুরু হওয়া প্রসঙ্গে ডিএনসিসির ট্র্যাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাইদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রকল্প শুরুর আগে কিছু নিয়মের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যেমন কাজের টেন্ডার আহবান, টেন্ডার ড্র, কার্যাদেশ প্রদানসহ বেশ কিছু কাজ করতে হয়েছে। এই জন্যই প্রতিশ্রুত সময়ে কাজ শুরু করতে আমাদের কিছুটা দেরি হয়েছে।’

এছাড়া ফুটওভার ব্রিজের কাজের অগ্রগতির ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতারও সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার। তিনি বলেন, ‘ব্রিজটি যেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে বেশ কিছু বৈদ্যুতিক পিলার রয়েছে। বৈদ্যুতিক লাইনগুলো অন্যদিকে সরিয়ে দিলে কাজের অগ্রগতি আরও বাড়বে। তাছাড়া রোড ডিভাইডারে লাগানো সড়ক বাতির পিলারগুলোকেও অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।’ তাছাড়া নির্মাণ সামগ্রি ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রাখার মতো পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণেও নির্মাণ কাজের গতি ধীর রয়েছে বলে জানিয়েছে শ্রমিকেরা।

এদিকে, দূর্ঘটনাস্থলে জেব্রা ক্রসিং, স্পিড ব্রেকার ও আলোর ব্যবস্থা করলেও ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পারাপার করতে হচ্ছে এখানের পথচারীদের। কর্মব্যস্ত দিনে প্রতি মিনিটে এই সড়ক দিয়ে প্রায় দুইশো থেকে তিনশো মানুষ পারাপার করলেও নেই কোনো শৃঙ্খলা। দেখা গেছে, পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় ও আইন প্রয়োগের অভাবে জেব্রা ক্রসিংয়ের ব্যবহার করা যায় না বললেই চলে। অধিকাংশ বাস, প্রাইভেট কার, ট্রাক নিয়মের তোয়াক্কা না করে দ্রুত গতিতে চলে যাচ্ছে, পথচারীরাও কোনরকমে দৌড়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে।

আবরারের সহপাঠী ও বাংলাদেশ বিইউপি ছাত্র আব্দুল্লাহ মামুন বলেন, ‘বসুন্ধরার এই সড়কে প্রায় ১৭ জনকে এখন পর্যন্ত প্রাণ দিতে হয়েছে। এখনো স্থানটি আগের মতোই বিপদজনক হয়ে রয়েছে। যে কোনো দিন আরেকটা দূর্ঘটনা ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আমরা আর কোনো রক্ত ঝরতে দেখতে চাই না, আমরা দ্রুত ফুটওভার ব্রিজ দৃশ্যমান দেখতে চাই।’

সারাবাংলা/ওএম/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর