‘কৃষির আধুনিকায়ন তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করবে’
১২ মে ২০১৯ ১৯:২৪
ঢাকা: কৃষির আধুনিকায়ন তামাক চাষে কৃষককে নিরুৎসাহিত করবে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।’
রোববার (১২ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পিকেএসএফ’র অডিটোরিয়ামে তামাকবিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনার ও তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক-২০১৯ পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘তামাক ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো থেকে প্রতিবছর সরকারের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হচ্ছে। কিন্তু পরোক্ষভাবে তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত লোকদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ে। শুধু যারা ঢাকায় যারা থাকেন, তারা ঠিকভাবে ট্যাক্স দিলে তামাক কোম্পানির এই ট্যাক্স পরিহার করা সহজ হবে। এতে তামাক উৎপাদনও বন্ধ করা যাবে।’
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে তামাক শতভাগ নির্মূলের ঘোষণা রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিকে সত্যিকার অর্থে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর ও আধুনিক কৃষি করা গেলে ২০৪০ সালের আগেই দেশে তামাকমুক্ত সমাজ গড়া যাবে। একই সঙ্গে অর্জিত হবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা। এক্ষেত্রে সবার অংশগ্রহণ জরুরি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা এক প্রবন্ধে জানানো হয়, বিশ্বের তামাক উৎপাদনকারী ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। তালিকায় প্রথমে রয়েছে চীন। বাংলাদেশের মধ্যে তামাক উৎপাদনকারী জেলার মধ্যে প্রথম হচ্ছে কুষ্টিয়া জেলা। তামাক চাষ ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৪৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২১৩ শতাংশ হয়েছে।
গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ অনুযায়ী, বর্তমান দেশে মোট তামাক ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৮ লাখ, যা মোট জনগোষ্ঠীর (১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব) ৩৫.৩ শতাংশ। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই হার অনেক বেশি। তামাক ব্যবহারের ফলে দেশের অর্থনীতিতে বছরে নিট ক্ষতির পরিমাণ ওই সময় পর্যন্ত ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
প্রতিবছর সিগারেট ক্রয়ে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ শতাংশ ও বিড়ি ক্রয়ে ০.৪ শতাংশ ব্যয় হয়। বর্তমানে এই ক্ষতির পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেড়েছে। শুধু ধূমপানের কারণেই আয়ুষ্কাল কমে যায় ১০ থেকে ২০ বছর। বিশ্বে যত লোক মারা যায়, তার দ্বিতীয় প্রধান কারণ ধূমপান।
অনুষ্ঠানে তামাকবিরোধী জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকার জন্য ৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ পদক দেওয়া হয়। সম্মাননাপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন- দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসক অধ্যাপক ড. প্রাণ গোপাল দত্ত।
পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল মালিক।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমও