বিলুপ্ত পাখিটি আবারও ফিরেছে
১৩ মে ২০১৯ ১৩:২৮
বিলুপ্ত পাখীটি আবারও ফিরেছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন একসময় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই পাখিটি এখন আবার চড়ে বেড়াচ্ছে বনে-বাদারে। প্রকৃতিতে বিরল এক পুনঃপুনঃবিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এটি সম্ভব হয়েছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।
গলার নিচে সাদা পালকের এই পুচ্ছবিহীন এই পাখি প্রজাতির শেষ ক’টিও পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো ১ লক্ষ ৩৬ হাজার বছর আগে কোনও এক বন্যায়। একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপেই ছিলো তাদের বাস। আর এত এত বছর পর পাখিটির আবার দেখা মিলেছে একই দ্বীপে। সেটি ভারত মহাসাগরের আলদাব্রা দ্বীপপুঞ্জের একটি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এই দ্বীপে মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি বলেই চলে।
সাদা গলার পাখিটি উড়তে পারে না। প্রায় দেড় লক্ষ বছর আগের পাখিটি এই নির্জন দ্বীপে পুঃনপুঃন বিবর্তনে এই উড়াল ক্ষমতা হারিয়েছে। এমন একটি বিরল পুনঃবিবর্তন এই প্রথমই ধরা পড়লো বিজ্ঞানীদের চোখে। বিষয়টিকে বিশ্বের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর একটি বলে মত দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের সঙ্গে যৌথভাবে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন তারা।
মুরগী আকারের পাখিটির আদিবাস ছিলো মাদাগাস্কারে। সেখান থেকে অভিবাসন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্থানে গেলেও মাংসাশিদের নাগালে পড়ে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যায়। যার কিছু গিয়ে পড়ে ভারত মহাসাগরের এই আলদাব্রা দ্বীপেও। সেখানে নেই কোনও মাংসাশীর বাস। সেখানে অবস্থানের কারণে ধীরে ধীরে এই পাখি তার ওড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ঠিক যেমনটা ঘটেছিলো বিশ্ব থেকে বিলুপ্ত অপর পাখি ডোডোর ক্ষেত্রেও।
কিন্তু ১ লাখ ৩৬ হাজার বছর আগের এক বিরল বন্যায় ভেসে যায় ওই দ্বীপের সকল গাছ-পালা, পশু-পাখি। ওড়ার ক্ষমতাহীন এই পাখিরাও বরণ করে একই পরিণতি।
এর পরপরই আসে বরফযুগ। দ্বীপ থেকে পাওয়া প্রায় এক লক্ষ বছর আগের হাড়গোড় পরীক্ষা করে গবেষকরা দেখিয়েছেন এই বরফযুগের আগে পড়ে একটি সময়ে পাখিগুলো তাদের ওড়ার ক্ষমতা হারায়।
গবেষক দলের প্রধান ড. জুলিয়ান হিউমের মতে, তাদের কাছে যে তথ্য উপাত্ত রয়েছে তাতে বিষয়টিতে নিশ্চিত হয়েই এ কথা বলছেন তারা। মাদাগাস্কারের ওই পাখিদের যেগুলো ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপে গিয়ে পড়েছিলো সেগুলো নানা পর্যায়ে নানা কারণেই তাদের ওড়ার ক্ষমতা হারায়। পাখিগুলোর ফসিল থেকে তারা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।
ভারত মহাসাহরের এই আলদাব্রা দ্বীপেই প্লেটোনিক যুগের কিছু নিদর্শন এখনো রয়ে গেছে। এখানকার ফসিলগুলো পরীক্ষা করে তার প্রমাণ পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
সারাবাংলা/এমএম