দিনাজপুরে জমি ভরা ধান, তবু ক্ষতি ৪০০ কোটি টাকা
১৪ মে ২০১৯ ০৭:৫৪
ঢাকা: ধানের বাজার একেবারেই ‘ঠাণ্ডা’। তাই বাম্পার ফলন হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। সারাদেশের মতো উত্তরবঙ্গের জেলা দিনাজপুরেও একই দশা। কৃষকরা বলছেন, চাষে যত টাকা খরচ করা হয়েছে, ধান ঘরে তুললে সেই মূলধন ওঠা নিয়েই শঙ্কা রয়েছে। জেলার ১৩ উপজেলার ধান চাষের হিসেব অনুযায়ী সবমিলিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমান প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।
জানা যায়, এ বছর দিনাজপুর জেলায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যা প্রায় কাঙ্ক্ষিতের চেয়ে একহাজার হেক্টর বেশি। চাষের পাশাপাশি ফলনও বাম্পার হয়েছে।
কৃষকরা জানান, ধানের উৎপাদন প্রতি মণে কৃষকদের খরচ হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৪০ টাকা। সে হিসেব প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা। অথচ বাজারে ধানের দাম মণ প্রতি ৫০০ থেকে থেকে ৬০০ টাকা। সে হিসেবে ধানের বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান পড়তে হচ্ছে।
জেলার পুরো ১৩ উপজেলা মিলিয়ে এই আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।
চিরিরবন্দর উপজেলার অমরপুর ইউনিয়নের জয়দেবপুর গ্রামের কৃষক রেজাউল হক জানান, এক বিঘা জমিতে ৩০ মণ ধান হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা। অথচ চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। লোকসান দিয়ে ধান বিক্রি করতে চাই না, তাই জমিতেই ফেলে রাখছি।
তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন জমি ইজারা নিয়ে ধান চাষ করা কৃষকরা। খানসামা উপজেলার কৃষক ইমরান হোসেন জানান, তিনি এক বিঘা জমি শুধু ইরি মৌসুমের জন্য জমি মালিকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকায় চুক্তি নিয়ে ধান চাষ করেছেন। ওই জমিতে এবার ৪০ মণ ধান হয়েছে, যার বাজার মূল্য ২০ হাজার টাকা। অথচ উৎপাদন খরচ ও চুক্তির টাকা সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ২৬ হাজার টাকা।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, ‘বাজারে ধানের দাম নেই। তাই কিছু করা যাচ্ছে না।’ সরকার থেকেও এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/জেএইচ/এমও