আধুনিক হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম
১৫ মে ২০১৯ ০৮:০৩
ঢাকা: একটা সময় ক্রিকেটের ভেন্যু হিসেবেও ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিত ছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের কল্যাণে এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আর নেই ক্রিকেটের আয়োজন। তবে ফুটবল আর অ্যাথলেটিকসের বিভিন্ন ইভেন্টে এখনও বলতে গেলে সারাবছরই মুখর থাকে স্টেডিয়ামটি। এই স্টেডিয়ামকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফুটবলসহ অন্যান্য ইভেন্টের জন্য আরও উপযোগী করে গড়ে তুলতে একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
‘ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন’ নামে স্টেডিয়ামের এই উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো মেনে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করায় বর্তমানে একনেকে উপস্থাপনের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জানায়, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের ক্রীড়া অনুরাগীদের কাছে স্টেডিয়ামটি জনপ্রিয় ভেন্যু হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে স্টেডিয়ামটিতে শুধু ফুটবল ও অ্যাথলেটিকস খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এর পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ধরনের বিনোদন অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ইভেন্টের উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের জন্য স্টেডিয়ামটি ব্যবহৃত হয়। বহুমাত্রায় ব্যবহৃত জাতীয় স্টেডিয়ামটির বর্তমান অবস্থা সন্তোষজনক নয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে সফল করে তুলতে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হয়েছিল জাতীয় স্টেডিয়ামটি। এরপর থেকে ইভেন্টভিত্তিক কিছু ঘষামাজার কাজ হলেও সেই অর্থে সংস্কার ও মেরামত হয়নি এই স্টেডিয়ামের। তবে মন্ত্রণালয় মনে করছে, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উজ্জ্বল সব মুহূর্তের সাক্ষী এই স্টেডিয়ামের আশু সংস্কার প্রয়োজন এবং সেই লক্ষ্যেই তারা প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মাসুদ করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য প্রকল্পটি প্রায় প্রস্তুত। একনেকে পাস হলেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শুরু করে শেষ করতে চাই। এই স্টেডিয়ামকে বিশ্বের বুকে একটি মডেল স্টেডিয়াম হিসেবে রূপ দিতে চাই।’
জানা গেছে, প্রকল্পটির আওতায় যেসব কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেগুলো হলো— মাঠ উন্নয়ন, গ্যালারি শেড নির্মাণ ও চেয়ার স্থাপন, ড্রেসিং রুমের আধুনিকায়ন, ফ্লাড লাইট, সিসিটিভি ক্যামেরা ও জেনারেটর স্থাপন, এলইডি স্ক্রিন, অ্যাথলেটিক ট্র্যাক, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বোর্ড স্থাপন, মিডিয়া সেন্টার, টিকেট কাউন্টার, ডোপ-টেস্ট রুম স্থাপন, চিকিৎসা কক্ষ, ভিআইপি বক্স, প্রেসিডেন্ট বক্স ও টয়লেট উন্নয়ন, চিকিৎসা সরঞ্জাম, জিম সরঞ্জাম, সাব-স্টেশনের সরঞ্জাম কেনা এবং এসি ও সৌর প্যানেল সরবরাহ।
প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কার করা হবে। এর ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফুটবলসহ অন্যান্য ইভেন্টের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন এবং প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে দক্ষ খেলোয়াড় গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
সারাবাংলা/জেজে/টিআর
ক্রিকেট ফুটবল বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়