ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগে নতুন মুখ নেই ১৩ বছরেও
১৫ মে ২০১৯ ১০:২৫
ঢাকা: ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যক্রম চলছে ১৩ বছর আগের কমিটি দিয়ে। ২০০৬ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগরের দুই কমিটি গঠন হলেও এরপর আর নতুন কোনো সম্মেলন হয়নি। হয়নি নতুন কোনো কমিটিও। ফলে মহানগর পর্যায়ের এই দুই কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব আসার সুযোগ তৈরি হয়নি।
এদিকে, এক যুগের বেশি সময় সম্মেলন না হওয়ায় ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই শাখার অনেক নেতাকর্মী উদ্যমহীন হয়ে পড়েছেন। কিংবা অন্য কোনো সহযোগী সংগঠনে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছেন তারা।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর কমিটিতে পদপ্রত্যাশীরা বলছেন, ছাত্রলীগের মহানগরের সম্মেলন হওয়ার পর বাদপড়া নেতারা এবং তাদের অনুসারীরা সংগঠনের কোনো ফোরামে জায়গা পাচ্ছেন না। স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান নেতারা ছাত্রলীগ থেকেই এসেছেন। তাদের আশা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের পদ পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
পদপ্রত্যাশী নেতাদের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৩ বছর সম্মেলন না হওয়ায় ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ উত্তর এবং দক্ষিণে নেতাকর্মীদের মাঝে অস্থিরতা নেমে এসেছে। হতাশ হয়ে পড়েছেন অনেক ত্যাগী। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের তাগিদ থাকলেও তা বাস্তবায়নে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগ করেছেন তারা।
২০০৬ সালের ৩১ মে ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে মহানগরকে দুইটি ভাগে ভাগ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির ঘোষণা করা হয়।
ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হওয়ার ছয় বছর পর ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেল অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটি ১০১ সদস্য বিশিষ্ট করার প্রস্তাব পাস করা হয়। কিন্তু এখনও ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দিয়ে সংগঠনের কাজ করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
শুধু তাই নয়, দীর্ঘ সময়েও মহানগরের দুই অংশ এখনও কয়েকটি থানায় কমিটি দিতে পারেনি। পুরনো বেশ কয়েকটি থানার পাশাপাশি নতুন থানাগুলোতেও কমিটি নেই। এছাড়া ১৭ বছর আগে দেওয়া কমিটি দিয়েই চলছে কয়েকটি থানার কার্যক্রম।
দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় সংগঠনের কাজ একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। মহানগরের নেতারা বারবার কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বললেও কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, অতি শিগগিরই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করা হবে।
এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাউছার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবেই সম্মেলন চাই। এর আগে আমাদের নেত্রীর সম্মতি পাওয়া গেলেও বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড, নির্বাচন বিভিন্ন ইস্যুর কারণে পরবর্তী সময়ে আর সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এবার আমাদের মূল দল আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার পর অবশ্যই স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
অপরদিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার কেন্দ্রের সম্মেলনের পর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগও নতুন কমিটি পাবে বলে আশা করছি।’
১৩ বছর আগে সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন মোবাশ্বের চৌধুরী। আর ফরিদুর রহমান খান ইরান নির্বাচিত হন সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে দক্ষিণের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন দেবাশীষ বিশ্বাস, আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন আরিফুর রহমান টিটু।
ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের উত্তরের সভাপতি মোবাশ্বের চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সকল নেতাকর্মী চাই, সম্মেলন হোক। ওপর থেকে নির্দেশনা এলেই আমরা সম্মেলন দেব।’
অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান টিটু সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরাও প্রস্তুত আছি, কেন্দ্রীয় কমিটি তারিখ দিলেই আমরা সম্মেলন দেব।’
সারাবাংলা/এমএমএইচ/একে