মেঘে বৃষ্টির আশ্বাস, প্রাপ্তি শুধুই গরম
১৬ মে ২০১৯ ১৭:০২
ঢাকা: জ্যৈষ্ঠ মাসের কাঁঠাল পাকা গরম নিয়ে খুব একটা আপত্তি নেই বাঙালির। শুধু মাঝে মাঝে সামান্য বৃষ্টি এলেই হয়। কিন্তু এবারের জ্যৈষ্ঠ মাসে সেই কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিরই যে দেখা মিলছে না! শুধু তাই নয়, মেঘের মানচিত্র যেন বৃষ্টির আশ্বাস দিয়ে গরমটা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এমনই বহুরূপী আচরণ এখন ঢাকার আকাশে।
বুধবার (১৫ মে) বেশ উত্তপ্ত ছিল ঢাকার প্রতিবেশ। বৃহস্পতিবারও (১৬ মে) দিনের শুরু থেকেই নগরবাসীকে চোখ রাঙিয়েছে সূর্য, সে প্রভাব চলছে এখনও। আবহাওয়া অফিস বলছে, বুধবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও আজ তা ছাড়িয়ে যেতে পারে ৩৬ ডিগ্রির পারদ। অবশ্য এর মধ্যেও ঢাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা।
তেতে ওঠা ঢাকা শহরে ‘গোদের ওপর বিষফোঁড়া’ হয়ে যুক্ত হয়েছে যানজট। সপ্তাহের এই শেষ কার্যদিবসে শহরটির গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যালগুলো সকাল থেকেই দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছে। পুরো শহরে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ একসঙ্গে চলমান থাকায় মোট রাস্তার পরিমাণ কমে গেছে, ফলে গাড়ির জটও হচ্ছে আগের থেকে বেশি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন পরিদর্শক বলেন, রাস্তা কমে গেছে, এটা সত্য। তবে এই রাস্তাতেও সুন্দরভাবে গাড়ি চালানো যেত, যদি ড্রাইভাররা আরেকটু বেশি সচেতন হতেন। আমাদের দেশের মানুষের বড্ড তাড়াহুড়া। ফলে কোনো কাজই জট না লাগিয়ে শেষ করতে পারি না আমরা।
ট্রাফিক পুলিশের এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা আহমেদ মইন। তিনি বলেন, এ দেশে রাস্তায় নামলে সবাই সবার আগে যেতে চায়। এই মানসিকতার কারণেই দীর্ঘ সময় যানজটে বসে থাকতে হয়। কেউই আর আগে যেতে পারে না।
এদিকে, তীব্র যানজটে বসে গরম পোহানো নিয়েও মাত্রাছাড়া বিরক্তি রাজধানীবাসীর। নিউমার্কেট এলাকায় কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী সামিয়া তাসনিম বলেন, ‘গরমের মাত্রা এখন অনেক বেশি। বাতাসও নেই। অসহ্য গরমের কারণে মানুষ বিভিন্ন রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এটা মনে হয় দিন দিন মানসিক অশান্তিও বাড়িয়ে দিচ্ছে।’ ঢাকা শহর দিন দিন ঘিঞ্জি হয়ে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গরম পড়ছে বলে মনে করেন এই গৃহিণী।
তবে মে মাসের আগের দিনগুলোর তুলনায় গত কয়েকদিনের তাপমাত্রা বেশ কমই বলা যায়। এ মাসেই তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছালেও বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেটিও খুলনাতে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুরে, ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া চিত্রে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অতিক্রম করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৫৬ মিলিমিটার।
সারাবাংলা/টিএস/টিআর