প্রতিভা জাহির করতে ১৭ রোগীকে বিষ দিলেন ফরাসি চিকিৎসক!
১৭ মে ২০১৯ ১১:১১
নিজের প্রতিভা জাহির করার জন্য জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করতে রোগীদের বিষ প্রয়োগ করার অভিযোগ ওঠেছে এক ফরাসি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ১৭ জন রোগীকে বিষপ্রয়োগের অভিযোগে ফ্রেডেরিক পেচিয়ার নামের ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে অপরাধ তদন্ত। এখন পর্যন্ত এসব বিষপ্রয়োগের ঘটনায় অন্তত নয় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। খবর বিবিসির।
প্রসিকিউটরদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের রোগীদের অ্যানেস্থেসিয়ার ডোজের উপাদানে পরিবর্তন আনতেন পেচিয়ার। এতে রোগীর শরীরে সঠিক পরিমাণ অ্যানেস্থেসিয়া প্রবেশ না করায় জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হত। আর তখন রোগীদের বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়তেন অপারেশন থিয়েটারে।
পেচিয়ার তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কিন্তু দোষী প্রমাণিত হলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
পেচিয়ার বলেন, এসব অভিযোগ আর তদন্তের পরিণতি যাইহোক না কেন, আমার ক্যারিয়ার শেষ। যে চিকিৎসকের নামের সঙ্গে বিষপ্রয়োগের অভিযোগ জড়িয়ে গেছে, তাকে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। আমার পরিবার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।
এদিকে, তার আইনজীবী জন-ইভস ল্য বরগনে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, পেচিয়ারের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত কিছুই প্রমাণ করে না। এমনটা হতে পারে যে, পেচিয়ার এসব বিষপ্রয়োগ করেছেন। কিন্তু সেটা কেবলই একটা ধারণা। কিন্তু সেটা কেবলই একটা ধারণা। এটা জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তার ওপর।
এদিকে, পেচিয়ারের বিরুদ্ধে আগেও বিষপ্রয়োগের অভিযোগ ওঠেছিল। ২০১৭ সালে সাত রোগীকে বিষপ্রয়োগের ঘটনায় তদন্তাধীন ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
চলতি সপ্তাহে পুলিশ তাকে তার করা অপারেশনের সময় ৬৬জন রোগীর হার্ট অ্যাটাকের হওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। যদিও ওই রোগীগুলো খুব একটা ঝুঁকিতে ছিল না। ওইসব রোগীদের মধ্যে চার বছর বয়সি শিশুও ছিল। অভিযোগ ওঠেছে, এর মধ্যে অন্তত ১৭ জনের অ্যানেস্থেসিয়া ডোজ বেশি দিয়েছিলেন তিনি।
প্রসিকিউটর এতিয়েন ম্যানটক্স স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরণের অপারেশনের ঘটনায় সহকর্মীদের সঙ্গে প্রায়ই বিতর্কে জড়িয়ে পড়তেন পেচিয়ার। এই ঘটনাগুলো ঘটার সময় তিনি প্রায়ই অপারেশন থিয়েটারের আশপাশে থাকতেন। এছাড়া, তখন কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ সে বিষয়ে সবার আগে সিদ্ধান্ত দিতেন। যদিও তার অন্য সহকর্মীদের কাছে রোগীর মধ্যে অ্যানেস্থেসিয়ার ডোজ বেশি পড়া বা পটাসিয়ামের ডোজ বেশি পড়ার বিষয়ে ভাবার কোনো কারণ ছিল না।
সারাবাংলা/আরএ