৮ লাখ টাকায় ইউরোপ যাত্রা, চক্রের তিন জনকে গ্রেফতার
১৭ মে ২০১৯ ১৪:৩৬
ঢাকা: অল্প খরচে উন্নত দেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা করা পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। র্যাব জানায়, বেশ কয়েকটি এজেন্সির সদস্যরা গ্রামের অল্প শিক্ষিত লোকদের বেশি বেতনের লোভ দেখিয়ে মাত্র ৮ লাখ টাকায় ইউরোপে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করে আসছে।
শুক্রবার (১৭ মে) অবৈধভাবে ইউরোপে পাঠানোর সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় জড়িত চক্রের ৩ সদস্য সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে এসব তথ্য দেন র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে উচ্চ বেতনে বিদেশে কর্মসংস্থানের লোভ দেখিয়ে, দীর্ঘদিন যাবৎ এ ধরনের অপরাধ করে আসছে চক্রটি। এই মানবপাচারকারী চক্রটি ইউরোপ পাঠানোর জন্য ৮ লাখ টাকা করে নেয়। যার ৫ লাখ টাকা লিবিয়া যাওয়ার আগে এবং বাকি ৩ লাখ টাকা লিবিয়া যাওয়ার পর ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে নিচ্ছে।
র্যাবের এই মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পাঠানো মানবপাচারকারীদের এ ধরনের ৫/৬ টি এজেন্সি রয়েছে। যার দুটি এজেন্সির ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করা গেছে।’
তাদের বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গত (৯ মে) অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরের তিউনিশিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে প্রায় ৮০/৯০ জন নিখোঁজ হয়। এরমধ্যে বাংলাদেশি ৩৯ জনের মধ্যে ১৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই ৩৯ জন গ্রেফতার হওয়া ২ এজেন্সির ৩ সদস্যের পাঠানো বাংলাদেশি ছিল।
অন্যদিকে, ইউরোপে মানব পাচারকারী চক্রের রুট সম্পর্কে র্যাব জানায়, প্রথমে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়াতে পাঠানো হয়। এজন্য, তারা তিনটি রুট ব্যবহার করে। প্রথমে বাসযোগে কলকাতা। কলকাতা বিমানবন্দর যোগে দিল্লিতে। দিল্লি থেকে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয়। ভিকটিমরা শ্রীলঙ্কায় এজেন্টদের তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকদিন অবস্থান করেন। তারপর বিমানযোগে ইস্তাম্বুল তুরস্কের ট্রানজিট হয়ে ত্রিপলী লিবিয়া পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
র্যাব জানায়, ভিকটিমরা ত্রিপলীতে পৌঁছানোর পর, সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি কথিত ‘গুড লাক ভাই’ সহ আরও কয়েকজন এজেন্ট তাদের গ্রহণ করে থাকে। ত্রিপলীতে আরো কয়েকদিন অবস্থানের পর ভিকটিমদের আত্মীয়-স্বজন হতে বাকি অর্থ আদায় করে সমুদ্রপথে ইউরোপে পাঠানো হয়।
আর এভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ পথে যাওয়ার সময় ভিকটিমরা ভূমধ্যসাগরে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হয়।
এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে, মানব পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন, এনামুল হক তালুকদার, মোহাম্মদ আক্কাস মাতুব্বর, আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া।
সারাবাংলা/ইউজে/জেএএম