ট্রেনে নিজে বাড়ি না গেলে টিকিট পাবেন না মন্ত্রী-এমপি-সচিবরা
১৯ মে ২০১৯ ১২:১৯
ঢাকা: মন্ত্রী, সংসদ সদস্য (এমপি) ও সচিবরা নিজে ট্রেনে চড়ে বাড়ি না গেলে তাদের সুপারিশে ট্রেনের কোনো ‘ভিআইপি’ টিকিট দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তারা নিজেরা ট্রেনে চড়ে গন্তব্যে রওনা হলেই কেবল ৫ শতাংশ কোটা পাবেন। আর রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে ৫ শতাংশ টিকিট। বাকি সব টিকিট এবার সাধারণ যাত্রীদের জন্য ছেড়ে দেবে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
এর আগে, মন্ত্রী, এমপি, সচিবদের সুপারিশে ঈদের সময় বিপুল পরিমাণে ‘ভিআইপি টিকিট’ বিক্রি হতো। তাতে করে ঈদযাত্রায় রেলের টিকিট পেতে সাধারণ মানুষদের আরও বেশি ভোগান্তি পোহাতে হতো বলে অভিযোগ ছিল। ঈদযাত্রার জন্য সাধারণ মানুষ যেন আরও বেশি টিকিট পান, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
রেলওয়ে মহাপরিচালক রফিকুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, এবার রেলের ঈদ টিকিটে মাত্র দু’টি কোটা থাকবে— একটি রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এবং আরেকটি ভিআইপি। দু’টি মিলিয়ে ১০ ভাগ কোটা থাকবে। বাকি সব টিকিট উন্মুক্ত থাকবে সাধারণ যাত্রীদের জন্য।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এমপি, সচিব, অতিরিক্ত সচিবরা আগে ডিও লেটার পাঠিয়ে বহু টিকিট চেয়ে বসতেন। এবার এরকম কোনো ডিও লেটার গ্রহণ করা হবে না। যারা প্রকৃত ভিআইপি এবং ট্রেনে ভ্রমণ করবেন, তাদেরই কেবল ভিআইপি হিসেবে বিবেচনা করে টিকিট দেওয়া হবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার ঈদে ভিআইপি কোটা বিলুপ্তই করতে চেয়েছিলেন নতুন রেলপথ বিষয়ক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তবে শেষমেশ তিনি মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে— কেবল মন্ত্রী, সচিব, এমপি ও বিচারপতিরা নিজেরা যদি ট্রেনে ঈদ করতে যান, তাহলেই তারা টিকিট পাবেন। তাদের ডিও লেটার বা সুপারিশে কোনো টিকিট ইস্যু করা হবে না। মন্ত্রণালয় সেই নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে বলেই জানিয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঈদে এবার ঢাকা থেকে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের প্রায় ৩০ হাজার টিকেট বিক্রি হবে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ বিক্রি হবে অ্যাপের মাধ্যমে। আর এবার প্রথমবারের মতো কমলাপুর রেল স্টেশন ছাড়াও চারটি স্থানে টিকিট বিক্রি করা হবে।
সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে রাজধানীর ফুলবাড়িয়া পুরাতন রেল ভবনের কাউন্টার থেকে। যমুনা সেতু হয়ে পশ্চিমাঞ্চলগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টার থেকে। এছাড়া ময়মনসিংহ-জামালপুরগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকিট দেওয়া হবে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন থেকে; নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকিট দেওয়া হবে রাজধানীর বনানী রেলওয়ে স্টেশন থেকে। আর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে।
২২ মে বিক্রি করা হবে ৩১ মে’র টিকিট, ২৩ মে বিক্রি করা হবে ১ জুনের টিকিট, ২৪ মে বিক্রি করা হবে ২ জুনের টিকিট, ২৫ মে বিক্রি করা হবে ৩ জুনের টিকিট ও ২৬ মে বিক্রি করা হবে ৪ জুনের টিকিট। এদিকে ফিরতি ঈদযাত্রার জন্য ২৯ মে বিক্রি করা হবে ৭ জুনের টিকিট, ৩০ মে বিক্রি করা হবে ৮ জুনের টিকিট, ৩১ মে বিক্রি করা হবে ৯ জুনের টিকিট, ১ জুন বিক্রি করা হবে ১০ জুনের টিকিট এবং ২ জুন বিক্রি করা হবে ১১ জুনের টিকিট।
সারাবাংলা/এসএ/টিআর