Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধানের মূল্য ও পাটকল শ্রমিক ইস্যুতে দুই দিনের কর্মসূচি বিএনপির


১৯ মে ২০১৯ ১৩:৫৭

ঢাকা: ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত ও পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন দেওয়ার দাবিতে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ২১মে মঙ্গলবার সারাদেশে জেলাপ্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান এবং ২৩ মে ইউনিয়ন পর্যায়ে হাট-বাজারে মানববন্ধন।

রোববার (১৯ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুসহ অন্যরারা।

লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান না কিনে কৃষককে মধ্যস্থতাকরীদের কাছে জিম্মি করে ফেলেছে। ধানের ন্যায্য মূল্য না থাকায় টাঙ্গাইলের কালিহাতি, জয়পুরহাট, নেত্রকোণাসহ বিভিন্ন স্থানে কৃষক পাকা ধান ক্ষেতে আগুন দিচ্ছে, পাকা ধানে মই দিচ্ছে, সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছে।’

উৎপাদন খরচ থেকে ৩০০ টাকা কমে প্রতিমন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতি বিঘা জামিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে ২ হাজার টাকা। পুঁজিপতিরা তো বিশাল ঋণ মওকুফ পাচ্ছে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে খাচ্ছে, মেগা প্রকল্পের নামে দেশজুড়ে হরিলুট চলছে অথচ ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগানদাতা অসহায় কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না। বরং ন্যায্য মূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।

রিজভী বলেন, ‘সরকার প্রতি মণ ধান কেনার জন্য ১ হাজার ৪০ টাকা দিলেও কৃষকের হাতে যাচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। বাকি টাকা চলে যাচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা, মিল মালিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে। এ নিয়ে সারা দেশে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও সরকারের টনক নড়ছে না।’

কৃষকরাই বাংলাদেশের আত্মা, দেশের প্রাণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কৃষকদের রক্ষা না করলে বাংলাদেশে অভিশাপ নেমে আসবে। কৃষকরা উৎপাদন বন্ধ করে দিলে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে, ১৭ কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। পৃথিবীর সকল দেশে কৃষকরা উৎপাদন করে লাভ করে, আর আমাদের দেশের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘একদিকে চাল রফতানি করা অপর দিকে দেদারসে আমদানি করার এ ভানুমতির খেল বন্ধ করতে হবে। মধ্যস্থতাকারী সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ধান না কিনে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকেই ধান কিনে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে।’

‘এবারের বোরো ধানের নির্ধারিত দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ থাকলেও ধানের দাম বাড়ানোর সুযোগ আপাতত সরকারের হাতে নেই। ধান কিনে ধানের দাম বাড়ানো এই মুহূর্তে সম্ভব নয়’— কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাকের এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আগের রাতের ভোটের সরকারের মন্ত্রীর কাছ থেকে এরকম গণবিরোধী বক্তব্য ছাড়া আর কিছু আশা করা যায় না। কৃষেককে পথে বসিয়ে নিজেদের লোকদের টাকা লুটের সুযোগ করে দিতেই ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে কৃষকদের। কৃষকদের পেটে লাথি মারতেই তৎপর মধ্যরাতের ভোটের সরকার।

পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রিজভী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন, বকেয়া মজুরীসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন পাটকলের শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। দেশের ২৬টি পাটকলে একযোগে লাগাতার ধর্মঘট শুরু করলেও সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিচ্ছে না। বেতন না পেয়ে শ্রমিকরা অর্ধাহার ও অনাহারে জীবন যাপন করছে।

তিনি বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও শ্রমিকরা মজুরি থেকে বঞ্চিত, শোষিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। শ্রমিকরা বিভিন্ন পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন করছে। তার বিনিময়ে তারা মজুরি দাবি করছে।’

সারাবাংলা/এজেড/জেএএম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর