Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজেটের ২০ শতাংশই যাচ্ছে খেলাপিদের পকেটে: মেনন


২০ মে ২০১৯ ১৬:২০

ঢাকা: দেশের জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশই ঋণখেলাপিদের পকেটে চলে যাচ্ছে বলেই বাজেটের সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

তিনি বলেন, ‘যে দেশে মোট বাজেটের ২০ শতাংশ ঋণখেলাপিদের পকেটে চলে যাচ্ছে, সেখানে বাজেট যত বড়ই হোক না কেন, দেশের জনগণ কখনোই তার সুফল ভোগ করতে পারবে না।’

সোমবার (২০ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টি আয়োজিত ‘দুর্নীতি, ঋণখেলাপি ও ব্যাংকিং খাতের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অঙ্গীকার চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

মেনন বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে, এবারের অর্থবছরে পাঁচ লাখ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হবে। এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ব্যাংকিং, খেলাপি ঋণ আর দুর্নীতি। বিপরীতে বাজেট বাস্তবায়নের মূল বিষয় হচ্ছে নীতি। নীতিভ্রষ্টতা থাকলে সেই বাজেট উন্নয়নমুখী হয় না। গত অর্থবছরে আমাদের জাতীয় বাজেট ছিল চার লাখ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর ৫০/৬০ শতাংশও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে আবার অনেক টাকা দুর্নীতির কারনে লুটপাট হয়ে গেছে। ঋণখেলাপিরা জনগণের টাকা পকেটে ঢুকিয়ে সরকারের কাছ থেকে ঋণ মওকুফ করিয়ে নিচ্ছে।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ঋণখেলাপির ধারার প্রবর্তন হয়েছিল উল্লেখ করে মেনন বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের এই সর্বনাশের সূচনা করেছিলেন। পরবর্তীতে স্বৈরাচারী এরশাদও শিল্পপতিদের অবৈধ সুবিধাটি দিয়ে এই ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল হয়েও ঋণখেলাপিদের প্রশ্রয় দিচ্ছে এটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’

দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন আরও গতিশীল হচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দেশে কৃষকদের ধানের ন্যায্য মূল্য দেওয়া হচ্ছে না, কৃষকেরা ঋণ পাচ্ছে না। অথচ কৃষিতে অবদান না রাখা শিল্পপতিরা ঠিকই কৃষকদের বরাদ্দ ঋণ নিয়ে যাচ্ছে। দুদকের এদিকে কোনো নজর নেই, দুদক ব্যস্ত প্রাইমারি স্কুলে কে ক্লাস নিচ্ছে না, কে ১০ বছর আগে দুর্নীতি করেছিল এসব নিয়ে। অথচ বাংলাদেশে যদি শিল্পপতিরা দুর্নীতি না করতো তবে প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশ আরও বেড়ে যেত।’

ব্যাংকিং খাতে সীমাহীন অরাজকতা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো দিনদিন দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ছেএটা স্বয়ং অর্থমন্ত্রী বলেছেন। কিন্তু বারবার দাবি করলেও কোনো ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হচ্ছে না। কারণ এতে করে শর্ষের ভূত বের হয়ে আসতে পারে। ব্যাংকগুলো যদি কোনো কারণে ভেঙে পড়ে, তাহলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু উল্টো নতুন নিয়ম করা হয়েছে, ব্যাংকগুলো দিনদিন পরিবারতান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে।’

ওয়ার্কাস পার্টির ঢাকা মহানগরের সদস্য বেনজির আহমেদ বলেন, আমরা জনকল্যাণমুখী বাজেট চাই, যে বাজেট সাধারণের বোধগম্য হবে, সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে। বাংলাদেশের প্রস্তাবিত বাজেটের মোট টাকা খরচ তো হয়ই না, বরং ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে অনেকে ফুলে-ফেঁপে ওঠে। বাংলাদেশ মানি লন্ডারিংয়ে দ্বিতীয় হয়েছে, কৃষক ক্ষেতে আগুন দিয়ে দিচ্ছে। অথচ চাল আমদানি বন্ধ করা হচ্ছে না। মন্ত্রী বলছেন বাংলাদেশে উৎপাদিত চাল সবাই খেতে পারে না। এজন্য বাইরে থেকে সুগন্ধি চাল আমদানি করতে হয়। অথচ কৃষক-শ্রমিকের উন্নতি হয় না, চাল আমদানির নামে লুটপাটের মহোৎসব হয়।

দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায় বলেন, ‘দেশের মানুষ এই সরকারকে নির্বাচিত করেছে ধারাবাহিক উন্নয়নের জন্য। কিন্তু মানুষ বর্তমানে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে একমত হতে পারছে না। দুর্নীতি কমিয়ে, ডে টু ডে কাজ করে জনগণের জন্য দেশের জন্য বাজেট বাস্তবায়িত করতে হবে।’

ওয়ার্কাস পার্টির অন্যতম সদস্য আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও মহানগর ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রায়ের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/ওএম/টিআর

ঋণখেলাপি ওয়ার্কার্স পার্টি খেলাপি ঋণ জাতীয় বাজেট বাজেট রাশেদ খান মেনন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘আমাদের সেনাবাহিনী যেন তৈরি থাকে’
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:২৯

আগস্টে কমেছে মূল্যস্ফীতি
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৭

সম্পর্কিত খবর