‘খালেদা জিয়া জাও ভাত খেয়ে বেঁচে আছেন’
২০ মে ২০১৯ ১৪:৫৮
ঢাকা: কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গত চার দিন ধরে জাও ভাত খেয়ে বেঁচে আছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া গত চার দিন কোনো রকমে জাও ভাত খেয়ে বেঁচে আছেন। তার মুখে ঘা হয়ে ফুলে গেছে। জিহ্বা নাড়াতে পারছেন না। তিনি শয্যাশায়ী। এই রমজানে জেলে তার অবস্থা বিপদজনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।’
সোমবার (২০ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, “আপনি অন্যায়ভাবে ‘গণতন্ত্রের মা’-কে বন্দি করে মিডনাইট নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে চূড়ান্তভাবে সমাহিত করেছেন। গণতন্ত্রের এই অকাল প্রয়াণে শোক জানাতেও মানুষ ভয় পাচ্ছে। কারণ গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যার রক্তপাতের মাধ্যমে যে পিশাচের রাজত্ব কায়েম হয়েছে, তাতে মানুষ শঙ্কিত। আইনের শাসনকে ফাঁসিতে লটকিয়ে সন্ত্রাসীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দেশব্যাপী।”
কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী ‘হত্যা’ করতে চান অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘লন্ডনে আপনার মনের আসল কথা প্রকাশ করেছেন এবং দেশে এসে বেগম জিয়াকে জেলে রাখার কঠোর পদক্ষেপে সেটিরই প্রতিফলন নগ্নভাবে উন্মোচিত হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আইনকে নিজের মতো করে ব্যবহার করা, সাজানো মামলা দিয়ে প্রহসনের বিচারে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া— সবকিছু আপনি নিজেই করেছেন, তা আপনার কথাতেই জনগণ নিশ্চিত হয়েছে। এখন আর কোনো টালবাহানা-মিথ্যাচার-আষাঢ়ে গল্প বানিয়ে দেশনেত্রীকে জেলে রাখতে পারবেন না। জনগণের সামনে আপনার সব কুমতলব ফাঁস হয়ে গেছে।’
‘তাই আর কালক্ষেপণ না করে বেগম খালেদা জিয়াকে আপনার প্রতিহিংসাপরায়ণতার জিঞ্জির থেকে মুক্ত করে দিন। দেশের মানুষকে আর ক্ষিপ্ত করবেন না। দেশের মানুষ আজই তাদের প্রিয় নেত্রীর মুক্তি চায়,’— বলেন রিজভী।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির খবরে দেশবাসী বিস্মিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক-বীমা, কয়লা-পাথর, শেয়ার মার্কেট গলধকরণের পর এখন রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের দুর্নীতির খবরে বিস্মিত দেশবাসী। উন্নয়নের কথা বলে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে মহাদুর্নীতির ওপর ভর করে। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে বালিশ-কেটলিসহ প্রকল্পের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি কেনার মহাদুর্নীতির খবরে দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘প্রকল্পে কর্মরত মালি-ড্রাইভারদের বেতন লাখ টাকার কাছাকাছি— যা শুধু নজিরবিহীনই নয়, এটি একটি জাহাজ মার্কা দুর্নীতির দৃষ্টান্ত। এখানে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির খবরে দুদকের কোনো তৎপরতা নেই। কারণ দুদক বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের দমন ও ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি মোছার যন্ত্র হিসেবে কাজ করে আসছে।’
দেশব্যাপী বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি ও লুটপাটের মচ্ছব চলছে অভিযোগ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এসব দুর্নীতিতে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা জড়িত বলেই এগুলোর কোনো বিচার হচ্ছে না। এক্ষেত্রে দুদক নখদন্তহীন নিশ্চল নির্বিকার প্রাণীর ভূমিকা পালন করছে।’
গণতন্ত্র নেই বলেই লুটপাট প্রাধান্য বিস্তার করেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘এজন্য ঋণখেলাপিদের আরও ঋণ দেওয়া হচ্ছে। আর মধ্যরাতের ভোটে সহায়তাকারীদের বিনা সুদে গাড়ি-বাড়ি কেনার ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তাই মহাদুর্নীতির মাধ্যমে পকেট ভারী করাই হচ্ছে মিডনাইট সরকারের উন্নয়নের ভেতরের কাহিনী।’
সারাবাংলা/এজেড/টিআর