Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উন্নয়নের মহাসড়কে সিলেট


৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ১০:৫৪

বিলকিস আক্তার সুমি

সিলেট : আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই উন্নয়নের মহাসড়কের উঠেছে দেশের উত্তর-পূর্ব এলাকার জনপদ সিলেট। বিগত ৯ বছরে সিলেটে যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হাত ধরে উন্নত হওয়া সিলেটে মেগা প্রকল্প থেকে শুরু করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। অনেক উন্নয়ন প্রকল্প সিলেটবাসীর দাবির তালিকায়ও ছিল না। সিলেটকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী নিজেই এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ এ প্রসঙ্গে সারাবাংলাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে সিলেট উন্নয়ন সম্পর্কে বলে দিতে হয় না। তিনি নিজ থেকেই অবিরামভাবে সিলেটের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের রেখে যাওয়া উন্নয়ন সমাপ্ত করাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। প্রায় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু না করে, কেবল ঘোষণা দিয়েই বিদায় নিয়েছিল জোট সরকার।

বর্তমান সরকার প্রথম দফা ক্ষমতায় আসার পর সিলেটে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সুরমা নদীর উপর স্থাপিত কাজিরবাজার সেতু, গোলাপগঞ্জের কুশিয়ারায় স্থাপিত কুশিয়ারা সেতু, সুনামগঞ্জের সুরমায় স্থাপিত আব্দুজ জহুর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। ‘জনস্বার্থ’ বিবেচনায় এ কাজগুলো প্রায় চার বছরের মধ্যেই সমাপ্ত করা হয়।

এছাড়া সিলেটে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যক্টরি নামে একটি মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছিল। প্রকল্পটির কাজ গত দুই বছর আগে শেষ হয়েছে। বর্তমানে ওই ফ্যাক্টরী উৎপাদনে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

লন্ডন থেকে সিলেটে আসার সরাসরি বিমান যোগাযোগ বন্ধ করা হয়েছিল বিগত সরকারের শাসনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার হিথ্রো থেকে সিলেটে সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শত কোটি টাকা ব্যয়ে রিফুয়েলিং সিস্টেমস চালু করা হয়। বর্তমানে রানওয়ের শক্তিবৃদ্ধির জন্য ওই বিমানবন্দরে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। সিলেট নগরীর পানি সমস্যা সমাধানে দুইশ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের পর কাজও সমাপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া শতকোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট নগর ভবনের নব ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়ক উন্নয়নে গ্রহণ করা ৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে।

সিলেটের ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তামাবিল স্থল বন্দরে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেটের প্রথম স্থলবন্দর নির্মাণ করা হয়। এছাড়া সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিককরণে তিন হাজার টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

এত উন্নয়নের পরও সিলেটকে আরও উন্নত করে গড়ে তুলতে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এর মধ্যে বড় প্রকল্প হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চার লেনে রূপান্তর। ৩৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সড়ক পথটির উন্নয়নের জন্য প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে চীনের সঙ্গে চুক্তি করে সরকার। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গেলো সপ্তাহে সিলেটে সফরকালে জানান, চীনের অর্থায়নে ওই সড়কের কাজ হবে না। দেশের অর্থে এ সড়কটি ফোর লেনে উন্নীত করার কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু হবে। চীনের সঙ্গে চুক্তিতে সিলেটের আরও একটি মেগা প্রকল্পে ছিল সিলেট থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডাবল রেল লাইন নির্মান। চীনের চুক্তি থেকে সেটিও বাদ পড়েছে। এই প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে। এছাড়া সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রাসারনের একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিণত করার দাবি ছিল সিলেটবাসীর। প্রায় দেড় বছর আগে সিলেটে সফরকালে প্রধানমন্ত্রী সিলেটে আরেকটি নতুন পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দেন। তার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এরইমধ্যে সিলেটে অর্থমন্ত্রীর পছন্দে সুনামগঞ্জ বাইপাস সড়কে স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ প্রধানমন্ত্রী সফর ও সিলেটের উন্নয়ন নিয়ে সারাবাংলাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সিলেটে সফরকালে ৩৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ফোরলেন, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা আগেই দেওয়া হয়েছিল। এখন দাপ্তরিক কাজ চলছে। এই কাজগুলো শেষ হয়ে গেলে প্রধানমন্ত্রী কয়েক মাস পর সেগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এ কারণে এবারের তালিকায় ওই প্রকল্পগুলো রাখা হয়নি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবার নতুন নগরভবন নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন সহ সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত বুরহান উদ্দিন (রহ.) মাজারের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করবেন। সিলেট বিমান্দরের দুটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ, চারটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান কামরান।

সারাবাংলা/একে

 

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর