জাবির নতুন শৃঙ্খলা বিধি নিয়ে সমালোচনা
২১ মে ২০১৯ ০৩:০২
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্র-ছাত্রী শৃঙ্খলা বিধি সংক্রান্ত অধ্যাদেশের নতুন দুইটি ধারা সংযুক্ত করায় ক্যাম্পাসটির রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক সংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ৫ এপ্রিল বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় হালনাগাদ করা অধ্যাদেশে ধারা দুইটির অনুমোদন দেয়া হয়। নতুন এ দুই ধারার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন নিন্দা জানিয়েছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু বলেছেন, ছাত্র-ছাত্রী শৃঙ্খলা বিধির নতুন দুই ধারা শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতা লুণ্ঠন করবার এক কূটকৌশল। প্রশাসন নিজেদের অপস্বার্থ রক্ষার জন্য সকল ধরণের অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এই ধারা বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমির চৌধুরী জয় ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেছেন, তথ্য অধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রীয় আইন থকার পরও এই রকম আইন প্রণয়ন অত্যন্ত দূরভিসন্ধিমূলক। এই কালা কানুন প্রণয়নের মাধ্যমে তথ্যের অসততা বা বিকৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতৃক নির্ধারণ করে দেওয়ার ফলে ক্ষমতার বিরুদ্ধে পর্যালোচনামূলক সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্থ হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি প্লাবন তারিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনোই চায় না, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দূর্নীতি, অন্যায়, অনিয়মের খবরগুলো প্রকাশিত হোক। স্বাধীন সাংবাদিকতার চর্চাকে বাধাগ্রস্থ করতেই এই আইন করা হয়েছে। আর যেহেতু কোনটা বিকৃত, কোনটা অসত্য সংবাদ তা নির্ণয় করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ফলে আইনের অপপ্রয়োগের আশংকা থেকেই যায়।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রী শৃঙ্খলা বিধি সংক্রান্ত অধ্যাদেশের ৫-এর (ঞ) নং ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোন ছাত্র/ছাত্রী অসত্য এবং তথ্য বিকৃত করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনও সংবাদ বা প্রতিবেদন স্থানীয়/ জাতীয়/ আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে/ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ/প্রচার করা বা উক্ত কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না।’
৫-এর (থ) ধারায় বলা হয়েছে, কোনও ছাত্র-ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর উদ্দেশ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন অশ্লীল বা অসৌজন্যমূলক বার্তা প্রেরণ অথবা উত্যক্ত করবে না।
এই ধারা দুটির ব্যত্যয় ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্য লঘু শাস্তি হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরু শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার উর্ধ্বে যেকোন পরিমাণ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মো. আমির হোসেন বলেন, এটা সংশোধনের সুযোগ আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন পক্ষের আপত্তি থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। এজন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।
সারাবাংলা/টিআই/টিএস