রাত পোহালেই ৫ দিনের টিকিট যুদ্ধ
২২ মে ২০১৯ ০০:৩৪
ঢাকা: রাত পোহালেই পাঁচ দিনের টিকিট যুদ্ধ শুরু হচ্ছে। তবে এবারে সব ট্রেনের টিকিট এক সাথে একই স্থানে দেওয়া হচ্ছে না। অঞ্চলভেদে কমলাপুর রেলস্টেশনসহ ৬টি স্থান থেকে দেওয়া হবে ঈদের অগ্রিম টিকিট। অগ্রিম টিকিট দেওয়ার আগের দিনই কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রচুর ভিড় ও লাইন দেখা গেছে। যাত্রীদের টিকিট চাহিদা বেশি ৩০ ও ৩১ তারিখের টিকিটের।
২২ মে থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলবে ২৬ মে পর্যন্ত।
রেলমন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, ২২ মে দেওয়া হবে ৩১ মের, ২৩ মে ১ জুনের, ২৪ মে ২ জুনের, ২৫ মে ৩ জুনের এবং ২৬ মে ৪ জুনের আগাম টিকিট বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া আগামী ২৯ মে ৭ জুনের, ৩০ মে ৮ জুনের, ৩১ মে ৯ জুনের, ১ জুন ১০ জুনের ও ২ জুন ১১ জুনের ফিরতি টিকিট বিক্রি হবে।
এবারে রেলের ঈদ টিকিটে আরও বৈচিত্র আনা হয়েছে। টিকিটের ৫০ ভাগ দেওয়া হচ্ছে অনলাইন অ্যাপ ও এসএমএসে। রেল সেবা নামের অ্যাপ থেকে টিকিট কাটা যাবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে গত দুদিন ধরে যাত্রীরা অ্যাপ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন।
এবার রেলওয়ে ভিআইপি নামে টিকিট ব্লক করে রাখা হচ্ছেনা। মন্ত্রী, এমপি সচিব ও বিচারপতিরা যদি নিজে ট্রেন ভ্রমণ করেন তবেই তাদের টিকিট দেওয়া হবে। তাদের সুপারিশে অন্য কারও টিকিট দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
মন্ত্রী সুজন বলেন, তার নিজেরও মেয়েও টিকিট চেয়েছিল তিনি দেননি। ঢাকার এক এমপি প্রায় অর্ধশত টিকিট চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন তাও প্রত্যাখান করা হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিজে বা তার পরিবারের কেউ ভ্রমণ করলে বিশেষ সুবিধায় টিকিট দেওয়া হবে। এর বাইরে বিশেষ অনুরোধে ব্লকে কোনো টিকিট রাখা হবে না।
রেলওয়ের মহাপরিচালক জানান, এবার ঈদে রেল কর্মকতা কর্মচারীদের জন্য ৫ ভাগ ও ভিআইপি ৫ ভাগ ছাড়া বাকি সব টিকিট সাধারণ যাত্রীরা পাবেন।
ঈদে এবার আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেন মিলিয়ে সারাদেশে প্রতিদিন দেড় লাখ টিকিট বিক্রি হবে। কিন্তু চাহিদা সাড়ে তিন লাখের বেশি। আর কমলাপুরসহ ঢাকার ৬ স্থান থেকে দিনে দেওয়া হবে প্রায় ৩০ হাজার টিকিট।
আগের ঈদের চেয়ে এবারের ঈদে দুটি নতুন ট্রেন যুক্ত হয়েছে। একটি বনলতা এক্সপ্রেস অন্যটি পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন। এ হিসেবে ৩৩ টি আন্তনগর ট্রেন প্রতিদিন কমলাপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছাড়বে।
রেলওয়ে জানায়, ঢাকার কমলাপুর থেকে সমগ্র পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট, বিমানবন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট, তেজগাঁও থেকে ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী ট্রেনের টিকিট, বনানী থেকে নেত্রকোণাগামী মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেসের টিকিট ও ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন) থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম রিপন সারাবাংলাকে জানান, অতীতের মত ভিড় এবার হবে না। কারণ এবার কমলাপুর থেকে শুধুমাত্র পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে ঢাকা রাজশাহী রুটের ৪টি ট্রেন ধূমকেতু, বনলতা সিল্কসিটি ও পদ্মা এক্সপ্রেস। ঢাকা খুলনা রুটের সুন্দরবন, চিত্রা, খুলনা ঈদ স্পেশাল , ঢাকা পঞ্চগড় রুটের একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস। ঢাকা চিলাহাটী রুটের নীলসাগর। ঢাকা রংপুর রুটের রংপুর এক্সপ্রেস, ঢাকা লালমনিরহাট রুটের লালমনি এক্সপ্রেস, লালমনি ঈদ স্পেশাল, ঢাকা সিরাজগঞ্জ রুটের সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস, ঢাকা ইশ্বরদী রুটের ইশ্বরদী ঈদ স্পেশাল।
তবে ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে না। আর সোনার বাংলা বনলতা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট ও অন্যান্য ট্রেনের উচ্চ শ্রেণির টিকিট কিনতে সঙ্গে জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি রাখতে বলেছে রেলওয়ে।
সারাবাংলা/এসএ/এমএইচ