১৮ দিনে ২২ পোশাক কারখানা বন্ধ, তালিকায় আরও ৩০টি
২২ মে ২০১৯ ১৯:১৯
ঢাকা: ভালো নেই দেশের তৈরি পোশাক খাত। প্রতিদিনই বন্ধ হচ্ছে কোনো না কোনো কারখানা। গত ১৮দিনেই ২২টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বেতন ভাতা পরিশোধ করতে না পারা, শ্রমিক বিক্ষোভ ও শেয়ার্ড বিল্ডিং ব্যবহারের মতো নানা কারণে এসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ সমস্যাসহ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে আরও ৩০টি পোশাক কারখানা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে বন্ধ হয়ে যাওয়া তৈরি পোশাক কারখানাগুলো হল, লুমেন ড্রেস লিমিটেড (মালিবাগ- বেতন সমস্যা), লুফা ফ্যাশন লিমিটেড (মালিবাগ- বেতন সমস্যা), সুমন ফ্যাশন গার্মেন্টস লি. (বাড্ডা-শ্রমিক বিক্ষোভ), এপোচ গার্মেন্টস লিমিটেড (শান্তিনগর শেয়ার্ড বিল্ডিং), মোভিভো অ্যাপারেলস লিমিটেড (আশুলিয়া শ্রমিক বিক্ষোভ), জেনস ফ্যাশন লিমিটেড (রামপুরা শেয়ার্ড বিল্ডিং), স্টার গার্মেন্টস প্রাইভেট লি. (মধ্য বাড্ডা বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ), জারা ডেনিম লি. (টঙ্গি, শ্রমিক বিক্ষোভ), তিতাস গার্মেন্টস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (বনানী, শেয়ার্ড বিল্ডিং), ওসান ট্রাউজার লি. (গাজীপুর, বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ), ফোর এস পার্ক স্টাইল লি. (আশুলিয়া, বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ), ওয়াসিফ নিটওয়্যার লি. (গাজীপুর, বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ), ঝুমা ফ্যাশন লি. (জিরানী, বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ), ফলটেক্স কম্পোজিট লি. (টঙ্গি, বেতন সমস্যা), মার্ক মুড লি. (টঙ্গি, বেতন সমস্যা), স্পেস গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্ট্রি লি. (বোর্ড বাজার, বেতন সমস্যা), এভার ফ্যাশন লি. (উত্তর বাড্ডা, কারখানা বন্ধ) এবং এহসান সোয়েটার লি. (টঙ্গি, বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ)।
এছাড়া, ইন্ট্রামেক্স অ্যাপারেল লি. (গাজীপুর, বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ), ইন্ট্রামেক্স নিটওয়্যার লি. (গাজীপুর, বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ), ইন্ট্রামেক্স সোয়েটার লি. (বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ) ও ইন্ট্রামেক্স ক্লথিং (বেতন সমস্যা ও শ্রমিক বিক্ষোভ) এর কারখানায় বেতন-ভাতা নিয়ে সমস্যা চলছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) রাজধানীর পল্টনে ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক। বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক জানান, গত ১৮ দিনে বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত ২২টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে আরও ৩০টি কারখানা। দেশে আন্তর্জাতিক চাহিদার চেয়ে বেশি কারখানা গড়ে উঠা ও আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অসম প্রতিযোগতা কারণেও অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলেও বলে মনে করেন তিনি।
রুবানা হক বলেন, বেতন দিতে না পারলে আমরা কারখানা বন্ধ করে দিতে বলেছি। কোনো শ্রমিককে অভুক্ত থেকে ঈদে যেন বাড়ি যেতে না হয়। ঈদের আগে অন্তত ১০০ কারখানায় বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারবে না বলেও ধারণা তার। তবে, সব শ্রমিকই বেতন-ভাতা নিয়ে বাড়ি যেতে পারবে এমন প্রত্যাশাও বিজিএমইএর।
তবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বা নানা ধরণের সমস্যা চলছে এমন ৩০ টি কারখানার সবগুলোর নাম জানা সম্ভব হয়নি।
হটাৎ কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, কারখানা বন্ধের এই ঘটনা উদ্বেগজনক। যদি বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলো কমপ্লায়েন্স হয়ে থাকে, তাহলে বায়ারদের উচিৎ পর্যাপ্ত অর্ডার দেয়া। নতুন মজুরি ও বোনাস সব মিলিয়ে তারা চাপের মধ্যে থাকতে পারে। ব্রান্ড বায়ারদের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিৎ। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোরও তাদের পুরোনো গ্রাহক অর্থাৎ কারখানা মালিকের প্রতি সদয় হওয়া উচিৎ।
সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম