নদী দখল-দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হোন: তথ্যমন্ত্রী
২৪ মে ২০১৯ ০৮:৪০
ঢাকা: নদী দখল ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নদী নিরাপত্তা বিষয়ক সংগঠন নোঙর ও নদী রক্ষা জোট আয়োজিত ‘নদী ও পরিবেশ সুরক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ২৩ মে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবিতে এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
দেশের নদ-নদীগুলোকে মানবদেহের শিরা-উপশিরার সঙ্গে তুলনা করে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেহের শিরা যদি শুকিয়ে যায়, শরীর দিন দিন মৃত্যুর দিকে চলে যায়। দেশের নদীগুলোও ঠিক সেই রকম। আমাদের নদীগুলো যদি শুকিয়ে যায়, তাহলে দেশ বিপন্ন হবে, দেশের মানুষ বিপন্ন হবে, জনগণ বিপন্ন হবে, বিপন্ন হবে প্রকৃতি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের সুন্দরভাবে বাঁচার জন্যেই নদীগুলোকে দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত রাখা আমাদের দায়িত্ব। সেক্ষেত্রে সরকার জোরালোভাবে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নদীরক্ষার জন্য অনেক কাজ হয়েছে। নদী কমিশন গঠন হয়েছে, এটি আগে ছিল না। আমরা শতবর্ষের ডেল্টা প্ল্যান করেছি। আমরা এবার নতুন করে সরকার গঠনের পর অনেক নদী দখলমুক্ত করেছি। আপনারা দেখেছেন, বুড়িগঙ্গা ও কর্ণফুলীর তীরে বহু প্রভাবশালীর স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে ও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
নদী ও পরিবেশ রক্ষায় সরকারি সংস্থাগুলো আরও যত্নবান হবে বলে আশা প্রকাশ করে ড. হাছান বলেন, ‘নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ার কারণ কেবল দখল-দূষণ নয়, বন উজাড় হয়ে যাওয়াও এর একটি বড় কারণ। একসময় বুড়িগঙ্গা নদীতে মানুষ গোসল করত, এখন তা ভাবাও যায় না। প্রভাবশালী ও বিত্তশালী চক্রের লোলুপ দৃষ্টি থেকে নদীগুলোকে রক্ষা করতে হবে। আওয়ামী লীগের ১০ বছরের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও একজন পরিবেশকর্মীর অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে আছি, থাকব। নদী দূষণ, দখলকারী ও প্রভাবশালীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’
২০০৪ সালের ২৩ মে মেঘনাবক্ষে চারটি লঞ্চডুবিতে শতশত প্রাণহানির ঘটনা স্মরণে ২৩ মে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়ে নোঙর সভাপতি সুমন শামস বলেন, ‘নদী আমাদের মায়ের মতো। নদী ও পরিবেশ সুরক্ষায় সবার আন্তরিক ভূমিকাই পারে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে আমাদের বাঁচাতে।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার। অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের খান, রিভারাইন পিপল সভাপতি শেখ রোকন, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের প্রেসিডেন্ট মো. মনির হোসেন, ক্লিন রিভার বাংলাদেশ সভাপতি রুহুল আমিন ও নদী গবেষক মিহির বিশ্বাস।
সভাশেষে নদীরক্ষা জোটের সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের হাতে নোঙর সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর