নিরাপত্তা খাতে টোকিও’র আস্থা চায় ঢাকা
২৫ মে ২০১৯ ০৭:৪৭
ঢাকা: নিরাপত্তা খাতে জাপানের আস্থা চায় বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে অনাকাঙ্ক্ষিত গুলশান হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত টোকিও’র নিরাপত্তা সংক্রান্ত সতর্কবার্তা বহাল রয়েছে। আসছে সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে ঢাকা-টোকিও আড়াই বিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তি হওয়ারও কথা রয়েছে।
ঢাকা-টোকিও কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে অনাকাঙ্ক্ষিত সন্ত্রাসী হামলার পরপরই ঢাকার ওপর নিরাপত্তা সংক্রান্ত সতর্কবার্তা জারি করে টোকিও, যা এখনও বহাল আছে। পাশাপাশি ওই সময় ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একগুচ্ছ পরামর্শ বাস্তবায়নের জন্য বলেছিল দেশটি।
ঢাকার কূটনীতিকরা বলছেন, জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে নেওয়া সব কার্যক্রম শিনজো আবেকে অবহিত করবেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি হলি আর্টিজান হামলার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে টোকিও’র দেওয়া পরামর্শ ঢাকা বাস্তবায়ন করেছে, সেগুলো জানানো হবে। জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ ও নির্মূলে ঢাকার নেওয়া পদক্ষেপ ও সফলতাগুলোও তুলে ধরা হবে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো আরও জানাচ্ছে, হলি আর্টিজানের ঘটনা যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল, তা এরই মধ্যে টোকিওকে বোঝাতে পেরেছে ঢাকা। এ ছাড়া চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ এখন বৈশ্বিক সমস্যা, এটা শুধু বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়। এই বিষয়গুলো জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করে ঢাকার পক্ষ থেকে প্রস্তাব থাকবে, জাপান এখন নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখতে পারে।
কেবল নিরাপত্তা নয়, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতেও গুরুত্ব দেবে ঢাকা। জাপানের কাছে আরও বিনিয়োগ ও বৈশ্বিক ইস্যুতে সমর্থন চাইবে বাংলাদেশ। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঢাকার পক্ষে টোকিও’র সরব সমর্থন চাওয়া হবে।
কূটনীতিকরা বলছেন, বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-বি) উদ্যোগে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করার পাশাপাশি আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে টোকিও’র সহায়তা চাইবে ঢাকা। এ ছাড়া মাতারবাড়িতে শিল্পাঞ্চল তৈরি, গভীর সমুদ্রে মৎস্য ও সম্পদ আহরণে জাপানের সহযোগিতা বিষয়ে আলাপ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে, আসন্ন জাপান সফর সামনে রেখে গত ২০ মে (সোমবার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত হিরোয়াসু ঝুমি। ওই সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য তার দেশের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও সাধারণ জনগণ ভীষণ আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাপানের সবচেয়ে বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠান নিকেই’র আমন্ত্রণে ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ২৮ মে ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৯ মে জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে শিনজো’র সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাপান সফর শেষে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ৩০ মে সৌদি আরেব যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওআইসি’র সম্মেলন শেষে ছুটি কাটাতে ফিনল্যান্ড যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর