চট্টগ্রামের উন্নয়ন: মনজুর ৯০০ কোটি, নাছির ৬ হাজার কোটি
২৫ মে ২০১৯ ১৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের আমলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ৯০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছিল। তবে বর্তমান মেয়র আ জ নাছির উদ্দীন দায়িত্ব নেওয়ার পর, ইতোমধ্যে ছয় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয়েছে। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এই তথ্য দিয়ে বলেন, ‘অনেক প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তাকে কাজ করতে হচ্ছে।’
শুক্রবার (২৪ মে) চট্টগ্রামের গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য আয়োজিত ইফতার মাহফিল পূর্ব বক্তব্যে মেয়র মেয়াদের বাকি দিনগুলোতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
২০১৫ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। আগের মেয়াদের বিএনপি দলীয় মেয়র এম মনজুর আলমকে ভোটে হারিয়েছিলেন তিনি। ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে নাছিরের মেয়াদ শেষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রথমবারের মতো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির দায়িত্বপালনকারী আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘চেয়ারে বসলে বুঝা যায় দায়িত্ব পালন কত কঠিন।’
গত চার বছরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রথমেই সেবা সংস্থাগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কথা তুলে ধরেন মেয়র।
তিনি বলেন, ‘এই চট্টগ্রামে আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর খেকে অনেক সেবাধর্মী সরকারি সংস্থাগুলো বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। তারা রাস্তা ব্যবহার করেই এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তাগুলো টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত দুরূহ। আমার চেষ্টা করে যাচ্ছি জনভোগান্তি কতটুকু কমিয়ে আনা যায়। কিন্তু বলা যত সহজ, করা তত কঠিন।’
‘আলাদা আলাদা সেবাধর্মী সংস্থা। তাদের একই রাস্তা একাধিকবার কাটতে হয়েছে। দেখা যায়, কোনো কোনো ত্রুটির কারণে একই রাস্তা একাধিকবার কাটতে হয়েছে। এভাবে করতে করতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মানুষের কষ্ট কমাতে আমরা সামর্থ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ উজাড় করে দিয়েছি’—বলেন মেয়র।
৩০ বছর ধরে অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত না হওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে লোকবল নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘১৯৮৮ সালের অর্গানোগ্রাম আমরা এখনো বাস্তবায়ন করতে পারছি না। তখন শর্ত দেওয়া হয়েছিল, নিয়োগ বিধি অনুমোদন সাপেক্ষে লোক নিয়োগ করতে হবে। তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছিল। তারা অনেক আগেই বিভিন্নস্থানে বদলি হয়ে চলে গেছেন। তাই আগের মেয়ররাও এখানে বৈধভাবে লোক নিয়োগ দিতে পারেননি। এর প্রভাব সিটি করপোরেশনে পড়েছে।’
‘অনেকটা মেধাশূন্য হয়ে পড়ার মতো। ইতোমধ্যে অনেকে অবসরে চলে গেছেন। কাজের পরিধি ও ধরণ অনেক বদলেছে। জনবল কমে গেছে। এই অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে।’ বলেন মেয়র
সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে মেয়র বলেন, ‘একটা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দৃশ্যমান ও অদৃশ্য অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। জনগণ এসব বিষয়ে অতটা সচেতন নয়। আপনাদের মাধ্যমে সঠিক তথ্য পেলে তাদের সচেতনতার স্তর বাড়বে। কারণ আমরা প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিতে পারি না। এসব প্রকল্প একনেক অনুমোদিত। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। তারা কাজ করতে চাইলে তো দিতেই হবে।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কে বি আব্দুছ ছাত্তার মিলনায়তনে ইফতার অনুষ্ঠানে মেয়রের সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিম উদ্দিন শ্যামল ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামশুদ্দোহা।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই
আ জ ম নাছির উদ্দীন এম মনজুর আলম চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মনজুর সিসিসি বাজেট