ভারতের প্রায় অর্ধেক এমপিই ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ মামলার আসামি!
২৬ মে ২০১৯ ১৪:৪২
ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে জয় পাওয়া ৫৪২ সদস্যের প্রায় অর্ধেকের নামেই রয়েছে ধর্ষণ, হত্যা, সন্ত্রাসবাদসহ গুরুতর সব অপরাধের মামলা। ভারতের অলাভজনক নির্বাচন বিষয়ক পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের (এডিআর) এক প্রতিবেদন এ তথ্য উঠে এসেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ভারতের জাতীয় নির্বাচনের ফল ঘোষণার একদিন পরই শনিবার (২৫ মে) এডিআর ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ৫৪২ জন সংসদ সদস্যের ২৩৩ জনের বিরুদ্ধেই রয়েছে গুরুতর বিভিন্ন অপরাধের মামলা, শতাংশের হারে যা প্রায় ৪৩ শতাংশ।
এডিআর জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে কংগ্রেসের এক এমপির বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা, ডাকাতিসহ ২০৪টি মামলা। পার্লামেন্টে এরকম অভিযুক্তদের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। এডিআরের নির্বাচন বিষয়ক প্রধান অনিল বর্মা বলেন, সংসদে একটি বিরক্তিকর প্রথা চালু হয়েছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।
এডিআর জানিয়েছে, তারা লোকসভায় বিজয়ী ৫৩৯ জনের ওপর জরিপ চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি থেকে জয়ী ৩০৩ প্রার্থীর মধ্যে ১১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সন্ত্রাসবাদের দায়ে অভিযুক্ত। অন্যদিকে, কংগ্রেস থেকে নির্বাচিত ৫২ এমপির মধ্যে ২৯ জনের নামেই রয়েছে মামলা।
এডিআর বলছে, গত এক দশকে নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত আসামিদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, ৩০ জনের বিরুদ্ধ হত্যা ও তিন জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৪ সালে তাদের জরিপ শুরু হওয়ার পর ফৌজদারি অপরাধের মামলা থাকা সংসদ সদস্যের সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ।
এডিআর জানিয়েছে, কেরালার ইডুক্কি থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস এমপি দীন কুরিয়াকোসের বিরুদ্ধে ২০৪টি ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপির এমপি প্রজ্ঞা ঠাকুরের বিরুদ্ধে মসজিদে হামলা চালিয়ে ছয় জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। যদিও নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করছেন তিনি। তার মতোই অনেক সংসদ সদস্যই তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোকে রাজনৈতিক মামলা হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকে।
ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন কোনো এমপি যদি কোনো মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন এবং দুই বছর বা তার বেশি মেয়াদে তার শাস্তি হয়, তাহলে তিনি আর নির্বাচনে লড়তে পারবেন না। তবে প্রথমবার নির্বাচনে লড়ছেন— এমন কোনো প্রার্থী একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেও তাকে নির্বাচনে লড়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
এডিআরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালের সংসদে ১৮৫ জন এমপি’র বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। তবে তারা কেউ দোষী সাব্যস্ত হননি। তাদের অনেকেই আবার সংসদে জিতে এসেছেন এ বছরও।
সারাবাংলা/আরএ