Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভুল চিকিৎসার শিকার মুন্নী এখন লাইফ সাপোর্টে


২৬ মে ২০১৯ ১৪:৫৭

ঢাকা: নার্সের একটি ভুল ইনজেকশনে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে গোপালগঞ্জের কলেজছাত্রী মরিয়ম সুলতানা মুন্নী (২১)। গত ২২ মে থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) সে অচেতন পড়ে আছে। নেই কোনো উন্নতি।

মুন্নীর ভাই বিএম মুহিবুল হাসান অভিযোগ করেছেন, গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার কারণে তার বোনের এই অবস্থা।

তিনি জানান, মুন্নী গোপালগঞ্জের শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে। দুই মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে মুন্নী। তাকে নেওয়া হয় গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানান, মুন্নীর পিত্তথলিতে পাথর রয়েছে। অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে জন্ডিস দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ফের বাসায় নেওয়া হয়।

বাসায় আনার কিছু দিন পরে আবারও ব্যথা শুরু হয়। মুন্নীকে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডা. তপন কুমার মণ্ডল জানান, মুন্নীর পিত্তথলিতে শুধু নয়— পিত্তনালীতেও পাথর রয়েছে। তবে অন্য এক চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় পরীক্ষা করে দেখা যায়, মুন্নীর পিত্তনালিতে কোনো পাথর নেই। বিষয়টি জানানো হলে ক্ষেপে যান ডা. তপন কুমার মণ্ডল। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অস্ত্রোপচার করতে চান। যদিও সে সময় তিনি অস্ত্রোপচার করেননি, জানান মহিবুল।

মহিবুল বলেন, মুন্নী সুস্থ হতে পারছিল না। এক পর্যায়ে ২১ মে মুন্নীর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত দেয় চিকিৎসক। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রস্তুতির জন্য আমাদের একটি ওষুধের লিস্ট দেওয়া হয়। আমরা ওষুধ কিনে আনি। সেখানে অ্যানেসথেসিয়ার ওষুধও ছিল। ওই দিন ভোর সাড়ে ৬টার দিকে দায়িত্বরত নার্স কোহেলিকা ও শাহনাজ কেবিনে আসেন। টেবিলে দু’টি ইনজেকশন পাশাপাশি ছিল। ভুল করে মুন্নীর শরীরে তারা এনেসথেসিয়ার ইনজেকশন পুশ করেন। সঙ্গে সঙ্গে মুন্নী ছটফট করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমরা প্রশ্ন করি, এনেসথেসিয়ার ইনজেকশন পুশ করা হয় অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়ার পরে। সেটা পুশ করেন চিকিৎসকর। আপনারা কেন দিলেন? তখন দুই নার্স বলেন, আমাদের ভুল হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

মহিবুল আরও বলেন, বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের জানাই আমরা। তাদের পরামর্শে চার তলার কেবিন থেকে মুন্নীকে দ্বিতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেওয়া হয়। ওটিতে নিতে নিতেই মুন্নীর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়, খিঁচুনি শুরু হয়। ওটিতে নেওয়ার পরে কিছুটা স্টেবল হয়। তখনই তাকে খুলনা আবু নাসের হাসপাতালের আইসিইউতে নিতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

আবু নাসের হাসপাতাল থেকে ২২ মে হেলিকপ্টারে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় মুন্নীকে। তিনি বলেন, আমার বোনের এই অবস্থার জন্য কাকে দায়ী করব? এই দায় কে নেবে? যারা দায়ী আমি তাদের সবার বিচার চাই।

ঢামেক হাসপাতালের এনেসথেসিয়া বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সাইফুল মাহমুদ তুষার বলেন, মুন্নী ভুল চিকিৎসার শিকার। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

সারাবাংলা/এটি

আইসিইউ এনেসথেসিয়া ভুল চিকিৎসা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর