বগুড়া: বগুড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার শিকাররা জানিয়েছেন, এক ইফতার মাহফিলে তারা যোগ দিতে বগুড়ায় এলে প্রথমে পুলিশ তাদের কর্মসূচি পালনে বাধা দেয়। পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা ভিপি নুরসহ তার সহযোগী নেতাদের ওপর হামলা চালান। এ সময় বগুড়ার দুইজন সংবাদকর্মীও ছাত্রলীগের মারপিটের শিকার হন।
আহত নুরসহ ৪ জন বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তাৎক্ষণিক ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন।
রোববার (২৬ মে) বিকেলে বগুড়া শহরের সাতমাথা সংলগ্ন অ্যাডওয়ার্ড পৌর পার্কে অবস্থিত উডবার্ণ পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে উডবার্ণ পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। পরে পুলিশের বাধা ও হামলায় সেই অনুষ্ঠান ভন্ডুল হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বগুড়া শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব জানান, তারা পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ওই মিলনায়তনে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুর। দুপুরের পরপরই বগুড়া সদর থানা পুলিশ ও পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিএসবি) সদস্যরা ওই মিলনায়তনে গিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। পুলিশের কাছ থেকে আগাম কোনো অনুমতি না নেওয়ার কারণে পুলিশ সেখানে বাধা দেয়।
এ সময় তারা পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় ভিপি নূর ছাড়াও তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে রাতুল, আপন ও ফারুক আহত হন। ওই ঘটনার চিত্রধারণ করতে গিয়ে যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন শাহনেওয়াজ শাওন ও স্থানীয় একটি ওয়েব পোর্টালের সাংবাদিক মারপিটের শিকার হন।
আহতদের বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেওয়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নুরুল হক নুরসহ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা বগুড়া ত্যাগ করেন।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রোকেয়া সুলতানা অ্যানী জানান, তাদের আঘাত তেমন গুরুতর নয়। চিকিৎসা নিতে তারা হাসপাতালে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়া করছিলেন। এ সময় বগুড়া তাদের জন্য নিরাপদ নয় জানিয়ে দ্রুত চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দিতে বলেন। হাসপাতালে পৌঁছার ১০ মিনিটের মধ্যেই তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈমুর রাজ্জাক তিতাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রোববার অ্যাডওয়ার্ড পার্কের দক্ষিণ পাশের টিটু মিলনায়তনে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ইফতার মাহফিল ছিলো। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে পৌঁছার পর জানতে পারেন পার্কের ভেতরে উডবার্ণ লাইব্রেরি মিলনায়তনে সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে শিবির ইফতার মাহফিল করছে। ছাত্রলীগের কিছু কর্মী বিষয়টি নিশ্চিত হতে সেখানে যায়। তারা গিয়ে জানতে পারেন ভিপি নুরসহ ঢাকার কিছু ছাত্রনেতা সেখানে এসেছেন। তারা ভিপি নুরকে জানায় যে, ছাত্র শিবিরের ইফতার মাহফিলে তিনি যেন অংশ না নেন। এ সময় তিনি ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু করেন। একপর্যায়ে সেখানে মারপিটের ঘটনা ঘটে।
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, পূর্বানুমতি না নিয়ে ওই মিলনায়তনে কর্মসূচি পালনের খবর জেনে পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশ পৌঁছার আগেই সেখানে মারপিটের ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ কিছু ছাত্র তাদের মারপিট করেছে বলে পুলিশ জেনেছে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/একে
