বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাবে ছাত্রলীগ, পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ
২৭ মে ২০১৯ ১১:৪০
ঢাবি: ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিতর্কিতদের নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যাচ্ছে ছাত্রলীগ। আর এই খবরে রোববার মধ্যরাত থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা।
রোববার ( ২৭ মে) দিবাগত রাত একটা থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত অংশের সদস্যরা। তাদের দাবি যে কমিটিতে ‘বিতর্কিতরা’ রয়েছেন, সেই কমিটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিলে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করা হবে।
এর আগে রাত বারোটার দিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর করা একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির সবাইকে নিয়ে সোমবার বেলা ১১টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে বলে জানানো হয়।
এর পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশটি।
গত ১৩মে ছাত্রলীগের ৩০১ এক সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এর পরপরই কমিটিতে বিবাহিত, ছাত্রদল,অছাত্র যোগ্যদের বাদ দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করে পদবঞ্চিত একটি অংশ।
পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের মুখে গত ১৫ মে মধ্যরাতে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ১৭জন বিতর্কিতের ২৪ ঘন্টা সময় বেধে দেন। এই সময়ের মধ্যে নিজেরে নির্দোষ প্রমাণ না করতে পারলে পদ শূন্য ঘোষণা করা হবেও বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
গোলাম রাব্বানী বলেছিলেন, ‘গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, বিবাহিত, অছাত্র, মামলার আসামিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত ১৭ জনের নাম আমরা প্রাথমিকভাবে পেয়েছি। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে পদশূন্য ঘোষণা করে বঞ্চিতদের স্থান করে দেব ।’
কিন্তু সেই ২৪ ঘন্টা সময় পার হলেও তারা বিতর্কিতদের বিরুদ্ধে কোনা ব্যবস্থা নেয়নি। বরং তাদের নিয়ে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের গত কমিটির মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা বিষয়ক উপ সম্পাদক আল মামুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘যদি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে এসব বিতর্কিতদের নিয়ে ফুল দেওয়া হয় তখন অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। কারণ তারা যে অভিযুক্ত এগুলোর অকাট্য দালিলিক প্রমাণ রয়েছে।
আল মামুন আরও অভিযোগ তুলে বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমে বলে তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে। এর মানে কমিটি রান করানোর জন্য সে চেষ্টা করছে। এজন্য আমরা তাৎক্ষণিক রাজু ভাস্কর্যে বসে অবস্থান কর্মসূচি করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ তারা অমান্য করল। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করতে। তারা সেই নির্দেশ পালন করল না। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় তারা বিতর্কিতদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংগঠনকে বিতর্কিত করতে চায়।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদ গোলাম রাব্বানীকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
সারাবাংলা/কেকে/জেডএফ