Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজেটে ১১৭২৪ কোটি টাকার বাড়তি প্রণোদনা চায় পোশাক মালিকরা


২৭ মে ২০১৯ ১৮:৪২

ঢাকা: আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে পোশাক পণ্য রফতানিতে ১১ হাজার ৭২৪ কোটি টাকার ভর্তুকি চায় পোশাক মালিকদের শীর্ষ তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমইএ। খাতটিকে টিকিয়ে রাখতে এই পরিমাণ অর্থ বা নগদ পাঁচ শতাংশ প্রণোদনার দাবি জানান সংগঠনগুলোর নেতারা।

সোমবার (২৭ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমইএ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রাক বাজেট শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক, বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি এম মনসুর আহমেদ, এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)-এর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, আমরা ভর্তুকি দাবি করি, প্রণোদনা দাবি করি, তার একটি যৌক্তিক কারণ আছে। পোশাক শিল্প একটি ক্রান্তিকালে এসে পৌঁছে গেছে। অন্তত আগামী পাঁচ বছরের জন্য যদি এই প্রণোদনা দেওয়া হয় তাহলে পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। সব মার্কেটের জন্য যদি শতকরা পাঁচ ভাগ প্রণোদনা দেওয়া হয়, তাহলে যৎসামান্য ১১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি, এটি একটি বিরাট সংখ্যা নয়। রুবানা বলেন, বর্তমান বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। আমরা এখন পর্যন্ত গত এক মাসে ২২টি ফ্যাক্টরি বন্ধ করেছি। কারণ তারা বেতন দিতে পারছে না। প্রতিটি মালিকের কষ্ট হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গত ছয় বছরে ১২০০ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থাৎ প্রতিমাসে ১৭টি। এখন প্রতি মাসে ২০ থেকে ২২টি বন্ধ হচ্ছে। আগের চেয়ে কারখানা বন্ধ হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ঈদের আগে দুই একটি ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেলেও খুব একটা অবাক হবেন না। অসহায় শিল্প মালিকরা তাদের মেশিন বিক্রি করেও বেতন-ভাতা পরিশোধ করছেন। আমরা সবাইকে নির্দিষ্ট সময়েই বেতন পরিশোধ করতে বলেছি। কিন্তু আমাদের মনে রাখা দরকার ছোট মানেই নিকৃষ্ট নয়। ছোট ও মাঝারি ফ্যাক্টরিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। রফতানিতে প্রণোদনা পেলে ফ্যাক্টরিগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

বাজেটে বিজিএমইএর সুপারিশগুলো হল, সকল বাজারে রফতানির ওপর পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা বা ভর্তুকি দেওয়া, রফতানি সহায়ক মুদ্রা বিনিময় হার নির্ধারণ, পোশাক শিল্পকে সম্পূর্ণ ভ্যাটমুক্ত রাখা, পোশাক শিল্পের জন্য রফতানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর ০.২৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা, উৎস করকে আগের মত চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে গণ্য করা এবং কর্পোরেট কর ১২ শতাংশের পরিবর্তে পূর্বের ন্যায় ১০ শতাংশ করা। এছাড়া, পোশাক শিল্পের জন্য ৩০০ কোটি টাকার জরুরি ফান্ড গঠন, শ্রমিকের জন্য বিশেষ বরাদ্দ, বন্ডের অডিট কার্যক্রমের জন্য দলিলাদি দাখিলের সময়সীমা ৩ মাসের পরিবর্তে ৬ মাস করা ও পোশাক শিল্পের জন্য প্রযুক্তি উন্নয়নে তহবিল বরাদ্দের মতো দাবি রয়েছে সংগঠনটির।

বিকেএমইএ’র প্রস্তাবনায় পোশাক শিল্পের জন্য উৎস আয়কর প্রদানকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে নির্ধারণ ও রফতানির বিপরীতে প্রত্যাবাসিত মূল্যের উপর ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি এম মনসুর আহমেদ বলেন, আমরা অনেক ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ প্রণোদনার পরিবর্তে বাস্তবে পাই তিন দশমিক দুই শতাংশ। পাঁচ শতাংশ হারে সব দেশের ক্ষেত্রে প্রত্যাবসিত মূল্যের ক্ষেত্রে প্রণোদনা চেয়েছি। আমেরিকার বাজারের ক্ষেত্রে আমরা ১৬ শতাংশ নগদ প্রণোদনা চাই। কারণ দেশটিতে জিএসপি নেই। আমাদেরকে অনেক বেশি কর দিতে হয়।

এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)-এর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, প্রণোদনা নিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। নিট স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে। পোশাক শিল্পকে সম্পূর্ণ ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হোক।

সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম

পোশাক মালিকদের সংগঠন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর