অবৈধভাবে বিদেশে যাবেন না: প্রধানমন্ত্রী
২৯ মে ২০১৯ ০০:৪১
সরকারের দেওয়া বৈধ সুযোগ-সুবিধার বদলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিদেশে না যাওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৮ মে) জাপানের রাজধানী টোকিওর সিটি হোটেলে জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে এই আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। বহুলোক তাদের গন্তব্য সম্পর্কে না জেনে, চাকরির ধরন না বুঝে ভাল ভবিষ্যতের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমায়। অনেকে তাদের ঘর-বাড়ি, জমি-জমা বিক্রি করে টাকা দালালের হাতে তুলে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে যায়। অথচ তারা সঠিকভাবে জানে না কোথায় চাকরি হবে অথবা কত বেতন এবং কী সুবিধা তারা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি যথাযথভাবে সবকিছু জেনে বৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রথমে ডিজিটাল কেন্দ্রে আপনার নাম নিবন্ধন করুন ও পরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সবকিছু জেনে বিদেশে যান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। বৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার জন্য বিদেশে চাকরি প্রার্থীরা সেখান থেকে ঋণ নিতে পারেন। একইসঙ্গে সরকার সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাসহ অনেকগুলো চাকরির সুযোগ সৃষ্টিকারী প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তাছাড়া সরকার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের এসব উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং খাদ্যশস্য, শাক-সবজি, ফল, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে শীর্ষ দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে জনগণের মুখে হাসি ফুটানোর একটা লক্ষ্য আমার রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি কেবল নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার বদলে দেশের এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান। বলেন, দূতাবাসের উদ্যোগের পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশী পণ্যের বাজার খুঁজে বের করুন।
জাপানকে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন অংশীদার আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং তারা আমাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে প্রচুর সহায়তা করেছে। বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক প্রমাণ করতে ক্ষমতায় আসার পর পর আমি জাপান সফর করি।
জাপানের আরও বিনিয়োগ কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগে তাদের আকর্ষণ করতে আমরা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জমি বরাদ্দ দিয়েছি।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, দুই প্রবাসী বাংলাদেশী সালেহ মোহাম্মদ আরেক ও সাকুরা সাবের বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। বাসস।
সারাবাংলা/আরএ