চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক চার লেন দরপত্র প্রক্রিয়ায় ধীরগতি
৩০ মে ২০১৯ ০৮:০০
ঢাকা: চট্টগ্রাম–রাঙ্গামাটি মহাসড়ক চার লেন করতে দরপত্র প্রক্রিয়া চলছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে হাটহাজারী থেকে রাউজানের (পার্বত্য জেলার সীমানা) ঢালারমুখ পর্যন্ত মহাসড়কটি চার লেন হবে। ৫২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা খরচে প্রকল্পটির জন্য ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে। তবে, দরপত্র প্রক্রিয়া মূল্যায়নে ধীরগতি হওয়ায় অনিয়মের আশঙ্কা করছে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শোয়েব আহমেদ জানান, দরপত্র প্রক্রিয়া মূল্যায়ন এখনও চলছে। শিগগিরই কাজ শুরুর সম্ভাবনা নেই। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হলে তারপর নির্ধারিত নিয়মে কাজ শুরু হবে।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ সারাবাংলাকে বলেন, খুবই দ্রুত এই সড়কটির চার লেনের কাজ শুরু করা দরকার। সড়কটি এখনও চারলেন না হওয়ায় পাহাড়ে উৎপাদিত প্রচুর কৃষিজাত পণ্য আনা নেওয়া করতে সমস্যা হচ্ছে। এসব কৃষিজাত পণ্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে এই সড়কে পরিবহন করা হয়।
চট্টগ্রাম চেম্বারের এই নেতা আরও বলেন, হাটহাজারি ও রাউজান প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় যানবাহনের চাপ বেশি থাকে। যে কারণে যানজট নিরসন করতে হলে চারলেনের কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।
আর ভবিষ্যতে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সঙ্গে ট্রানজিট সড়ক বাস্তবায়ন এই সড়ক দিয়েই হবে– বলেন মাহফুজুল হক শাহ।
এ সড়ক দিয়ে হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি উপজেলা এবং পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ২০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন।
এ মহাসড়ক দিয়েই রাঙ্গামাটি জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত ফল, সবজি, বাঁশ, কাঠসহ বিভিন্ন পণ্য ট্রাক ও জিপভর্তি করে নেওয়া হয়। আবার রাঙামাটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সড়কটি ব্যবহার করেন। প্রতি ঈদেও হাজার হাজার পর্যটক পাহাড়ি সৌন্দর্য অবলোকন করতে এই সড়ক পথ ধরে চলেন।
সংকুচিত এ মহাসড়কে যাত্রীদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যানজটে পড়ে নষ্ট হচ্ছে যাত্রীদের মূল্যবান সময়। আবার ঘটছে দুর্ঘটনাও।
সওজ সূত্র জানায়, ৫২৮ কোটি টাকায় দুই প্যাকেজে মহাসড়কটি চারলেনের কাজ করতে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, আরেকটি স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এবং তৃতীয়টি তাহের ব্রাদার্স।
এর আগে প্রথমবার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ছিল স্পেক্ট্রা ও তাহের ব্রাদার্সের। তবে, তাদের সক্ষমতা না থাকায় প্রথমবার বাতিল হয় দরপত্র প্রক্রিয়া। এবারের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয় আরও একটি ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।
এর মধ্যে একটি ঠিকদারী প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, সাধারণত সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ দিনে দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শেষ হয়। কিন্তু এটি দশদিন পেরিয়ে গেলেও মূল্যায়ন শেষ হয়নি। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল কাজ পেতে রি–টেন্ডার করাতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন একজন ঠিকাদার। তবে, তিনি নাম প্রকাশ করেননি।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু হেনা মোহাম্মদ তারেক ইকবাল জানান, টেন্ডার মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে যাচ্ছেন। টেন্ডার প্রক্রিয়ার চেয়ারপারসন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শোয়েব আহমদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
সারাবাংলা/এসএ/জেএএম