মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে মহাসড়ক অবরোধের ডাক
১ জুন ২০১৯ ১৭:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য সাতদিন সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ৯ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন নগরী থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত সাগরতীরের ৩৮টি জেলেপল্লীর বাসিন্দারা।
শনিবার (১ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ‘উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎস্যজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ ফেডারেশন’ নামে একটি সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা এসেছে। চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর পতেঙ্গা থেকে সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর পর্যন্ত ৩৮টি জেলেপল্লীর ৫৩ হাজার পরিবারের পৌনে চার লাখ লোক এই সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি লিটন জলদাস জানান, সরকার ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণা করেছে। সাতবছর ধরে সরকারিভাবে প্রতিবছর মাছ ধরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ থাকে। এতদিন এই নিষেধাজ্ঞা ছিল শুধু বাণিজ্যিক ট্রলারের জন্য। ছোট নৌকায় যারা মাছ ধরেন, তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন না।
গত ৬ মে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক সভা থেকে ছোট নৌকায়ও মাছ ধরা বন্ধের সিদ্ধান্ত দেন বলে জানান লিটন জলদাস।
আকস্মিক এই সিদ্ধান্তের ফলে ৩৮টি জেলেপল্লীর বাসিন্দারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাছ ধরা ও বিক্রি ছাড়া আমাদের আয়ের আর কোনো উৎস নেই। বিভিন্ন এনজিও এবং দাদনের কাছে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে জেলে পরিবারগুলো। পরিবারপিছু ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আমরা এক কেজি চালও পাইনি।’
লিটন জলদাস আরও বলেন, ’১৫ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর হচ্ছে ইলিশ মাছ আহরণের সময়। এর মধ্যে আশ্বিন মাসের আমবস্যা-পূর্ণিমাকে সামনে রেখে সব জেলেদের জন্য ২২ দিন মাছ ধরা প্রতিবছরই বন্ধ থাকে। কিন্তু এবার হঠাৎ করে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরা সব জেলেদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় আমরা বিপাকে পড়ে গেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তকে ‘আমলাতান্ত্রিক ও গণবিরোধী’ উল্লেখ করে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে ৩৮টি জেলেপল্লীর বাসিন্দাদের মাছ ধরার অনুমতি দিয়ে পরিপত্র জারির দাবি করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিলে মাছ ধরা ৬৫ দিনের জন্য বন্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
লিটন জলদাস বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো সাতদিনের মধ্যে মেনে নেওয়ার অনুরোধ করছি। অন্যথায় ৯ জুন ভূখা-নাঙ্গা জেলে পরিবারগুলো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে এসে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত এবং পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা শ্যামল কুমার পালিত জেলেপল্লীর বাসিন্দাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ