বেঁধে দেওয়া সময়ে বেতন পাননি সব পোশাক শ্রমিক
২ জুন ২০১৯ ১৯:২৫
ঢাকা: সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী বেতন দিতে পারেনি শতভাগ তৈরি পোশাক কারখানা। রোববার (২ জুন) পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কারখানা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে পারেনি বলে জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলো। তবে, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, ৯০ শতাংশ কারখানায় বেতন দেওয়া হয়েছে। বাকি থাকা ১৫০টি কারখানা ৩ জুন বেতন পরিশোধ করবে। আর এরইমধ্যে শতভাগ কারখানায় বোনাস দেওয়া শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকার ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রোববারের (২ জুন) মধ্যে সকল পোশাক কারখানার কর্মীদের বেতন পরিশোধের কথা ছিল। এই সময়ের মধ্যে মে মাসের ২০ দিনের অথবা সক্ষম মালিকেরা পুরো মাসের বেতন পরিশোধ করবেন বলে সম্মত হয়েছিলেন। আর বোনাস দেওয়ার কথা ছিল ৩০ মে’র মধ্যে। বিজিএমইএ’র তথ্যমতে শতভাগ কারখানায় বোনাস দেওয়া শেষ হলেও এখনও কিছু কিছু কারখানায় বেতন দেওয়া বাকি রয়েছে। আগামীকালের মধ্যে শতভাগ কারখানাতেই বেতন পরিশোধ হবে বলে প্রত্যাশা বিজিএমইএ’র।
জানতে চাইলে টেক্সটাইল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল সারাবাংলাকে বলেন, ‘৩০ শতাংশ গার্মেন্টসে এখনও বেতন পরিশোধ হয়নি। যেহেতু আগামীকাল ব্যাংক খোলা রয়েছে, বাকি থাকা গার্মেন্টসগুলো হয়তো কাল বেতন দিয়েই ছুটি ঘোষণা করবে। যদি কালকের মধ্যে বেতন দেওয়া না হয়, তাহলে শ্রমিকরা হয়তো পরশু রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।’ বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০ শতাংশ কারখানা এখনও বেতন পরিশোধ করেনি। ৩ জুন পর্যন্ত সময় আছে। আমার আশা করছি এর মধ্যেই সবাই বেতন-ভাতা পরিশোধ করবে।’
জানতে চাইলে শ্রমিক সংগঠন ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কাসের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, বেতন বোনাস নিয়ে এবার তেমন কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। ছোটখাটো দু’একটি কারখানা ছাড়া সব জায়গাতেই বেতন ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। আর যেসব জায়গায় সমস্যা ছিল, বিজিএমইএ বসে আগেই তার সমাধান করেছিল। ফলে, বেতন ভাতা নিয়ে এ বছর শ্রমিকদের তেমন কোনো অভিযোগ নেই।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক সারাবাংলাকে বলেন, ২ তারিখের মধ্যে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। ৯০ ভাগ কারখানায় এরই মধ্যে বেতন দেওয়া শেষ হয়েছে। যারা বলছেন ৩০ শতাংশ কারখানায় বেতন দেওয়া হয়নি আমরা জানতে চাই কোন কোন কারখানায় বেতন দেওয়া হয়নি। শ্রমিকের স্বার্থে তাদের নাম বলতে হবে। যেহেতু আগামীকাল ব্যাংক খোলা আছে, আমরা আজকের মধ্যে সেইসব কারখানার সমস্যা সমাধান করতে চাই।
বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘শ্রমিকদের বেতন- বোনাস দেওয়ার বিষয়টি এখন শেষ পর্যায়ে। এরইমধ্যেই শতভাগ করাখানায় বোনাস দেওয়া শেষ হয়েছে। অনেক কারখানায় আজও বেতন দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু আগামীকাল পর্যন্ত সময় আছে, আমরা আশা করছি, সবাই কালকের মধ্যে বেতন পরিশোধ করবে।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বছর পোশাক শ্রমিকদের বেতন- বোনাস নিয়ে কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। কোনো কারখানা থেকে অভিযোগ আসলে আমরা তা সমাধান করেছি।
সংগঠনটির সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঠিক কী পরিমাণ কারখানায় বেতন দেওয়া বাকি আছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। অনেক কারখানা (২ জুন) আজও বেতন দিয়েছে। আগামীকালও (৩ জুন) দেবে। ফলে, ৩০ শতাংশ কারখানায় বেতন দেওয়া হয়নি, না এরচেয়ে কম- তা কাল বলা যাবে।’ অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে বিজিএমইএ’র এই নেতা বলেন, ‘যারা আজকের মধ্যে বেতন দিতে পারেনি, আশা করছি তারা কালকের মধ্যে বেতন পরিশোধ করবেন।’
সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম