ঘাটে নেই ফেরি, পাটুরিয়ায় ‘খালি দেরি আর দেরি’
২ জুন ২০১৯ ২১:০৩
মানিকগঞ্জ: প্রতিবারের মতো এবারও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সারা বছরই দুর্ভোগ সঙ্গে করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে চলতে হয় এ পথে। তবে ঈদের সময় ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ। রোববারও (২ জুন) তার ব্যতিক্রম হয়নি, ঘাটে দেখা গেছে সেই পুরনো দৃশ্যই। সারি সারি বাস-কোচের লম্বা লাইন, আর হাজারো যাত্রীর ভোগান্তি।
পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা বলছেন, পাটুরিয়া ঘাটে এলেই ‘খালি দেরি আর দেরি’। ফেরি কখন আসবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। তবে বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সকালে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। যে কারণে চাপ একটু বেড়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে পারাপার হতে পারেন সেজন্য ঘাট কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট আছে।
সরেজমিনে পাটুরিয়া ঘাটে দেখা যায়, সারি সারি বাস-কোচের লম্বা লাইন। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত বড় গাড়ির লাইন ঘাট ছড়িয়ে চলে গেছে প্রায় কয়েক কিলোমিটার। তার মধ্যে সকাল থেকে কয়েক দফা বৃষ্টিতে বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। বৃষ্টি থামার প্রায় ঘণ্টা খানেক পর ফেরি চলাচল শুরু হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়তে থাকে যানবাহনের চাপ।
বাস-ট্রাকের পাশাপাশি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের যাত্রীরাও ভোগান্তিতে পড়েন। ছোট গাড়ির জন্য পাটুরিয়ায় ৫নং ঘাট ঠিক করা হয়েছে। তবে গাড়িগুলোকে সোজা পথে না এসে টেপড়া এলাকার ভেতর দিয়ে নির্ধারিত ঘাটে আসতে হচ্ছে। যে কারণে দুপুরে ৫নং ফেরিঘাট থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার লম্বা লাইন ছিল গাড়ির।
গোল্ডেন লাইন পরিবহনের যাত্রী আকাশ বলেন, ‘ঘাটে এলেই খালি দেরি আর দেরি। শুনি ফেরি নাই। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বাসের ভেতর বসে রয়েছি। কখন ফেরি পাবো তা জানি না। আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ দেখার কেউই এখানে নেই।’
হানিফ পরিবহনের যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর হয়ে গেছে। সেই একই জায়গায় পড়ে আছি। অথচ পাশ দিয়ে ভিআইপি গাড়িগুলো চলে যাচ্ছে। আর কত সময় ঘাটে বসে থাকতে হবে জানি না।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম আজমল হোসেন বলেন, ‘এবারের ঈদে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফেরি রাখা হয়েছে। ঘাটে যানবাহনের চাপ যত বেশিই থাকুক না কেনো, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে অনায়াসে যানবাহন পারাপার করতে পারবো। বর্তমানে ২০টি ফেরি দিয়ে যানাবাহন পারাপার করা হচ্ছে। বেলা তিনটি পর্যন্ত বড় বাস রয়েছে প্রায় ১৫০ আর ট্রাক আছে ১০০টির মতো। তবে ছোট গাড়ির চাপ একটু বেশি, সেগুলো ৫নং ফেরি ঘাট দিয়ে পারাপার করা হচ্ছে।’
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সকাল ৯টার দিকে আবহাওয়া অনেক খারাপ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৩০ মিনিট ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। সে কারণে যানবাহনের চাপ একটু বেশি দেখা দিয়েছে।’
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, ‘ঘাটে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘাট এলাকায় বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছে। কন্ট্রোল রুম থেকে তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’ পাশাপাশি যানবাহনের সিরিয়ালে যেন কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশও কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/এমও