Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদযাত্রায় ‘জীবনবাজি’


৩ জুন ২০১৯ ২১:১৩

ঢাকা: প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন রাজধানীবাসী। তাই কোনোকিছুই পরোয়া না করেই জীবনের মায়া ছেড়ে ঝুঁকি নিয়েই ট্রেনের ছাদ ও বগির মুখে ঝুলে ঝুলে ঈদযাত্রাতেও পিছপা হচ্ছেন না তারা। আর প্রশাসনও বলছে, হাজার হাজার যাত্রী সামাল দেওয়ার সক্ষমতা নেই। তাই নিরুপায় তারা।

সোমবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরমুখো হাজারো মানুষকে যাত্রা করতে দেখা যায়। কোনোরকমে ট্রেনে ওঠার জন্য তারা ভিড়ের মধ্যে যেন জীবনটারেই বাজি ধরছেন তারা। কেউ কেউ ট্রেনের ছাদে, বগির মুখে, দুই বগির মাঝখানে কোনোরকমে জায়গা করে নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেন এমন যাত্রা করছেন জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জগামী যাত্রী তৌফিক হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘টিকিট পাননি লাইনে দাঁড়িয়েও। কি করবো, বাড়িতে তো যেতেই হবে। তাই ঝুঁকি নিয়েই যাচ্ছি।’ নিরুপায় হয়েই পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য এই ঝুঁকি নেওয়া বলেও জানান তিনি।

আরেক যাত্রী সাদিয়া হক, তিনি গামের্ন্টসে চাকরি করেন। স্বামী, সন্তান নিয়ে বগির মুখে কোনোরকমে জায়গা করে নিয়েছেন। ঝুলতে ঝুলতেই তিনি বলেন, ‘আমরা গরীব ভাই। কি আর করব বলেন? এভাবেই তো আমাদের দিন কাটে। আর গ্রামের বাড়ি ছাড়া কি ঈদের আনন্দ জমে? তাই একটু না হয় ঝুঁকিই নিলাম।’

এদিকে প্রতিটি ট্রেনই আধা ঘণ্টা থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি করে স্টেশনে আসছে। এ নিয়ে ঘরমুখো যাত্রীদেরও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। তবে কতৃর্পক্ষ বলছে, ঈদের সময় কোনোকিছু শিডিউল মোতাবেক সম্ভব নয়। এরপরও তারা সবকিছু ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন।

ট্রেনের দেরি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দর রেলস্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘যাত্রীদের ওঠা-নামার চাপ বেশি। এ কারণে একটু দেরি হচ্ছে। কয়েকটি ট্রেন আগে থেকেই শিডিউল বিপর্যয়ে ছিল। তবে এসব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, রোববার সিল্ক সিটি বিমানবন্দরে ৩টা ১০ মিনিটে আসার কথা থাকলেও সেটা ২ ঘণ্টার বেশি লেট ছিলো। নীলসাগর সকাল সাড়ে ৮টায় বিমানবন্দর থাকার কথা থাকলেও সেটা দুপুর দেড়টায় ছেড়ে গেছে। সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস বিকেল ৫টা ২৭ মিনিটে বিমানবন্দর থাকার কতা থাকলেও সেটা আধা ঘণ্টা লেট ছিলো। আর চিত্রা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিমানবন্দর থাকার কথা থাকলেও সেটা ঘণ্টা ২ লেট হবে।

ট্রেনের ছাদে যাত্রী যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘দুপুর পর্যন্ত কোনো যাত্রী ছাদে যায়নি। কিন্তু বিকেল থেকে যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় আমাদের পক্ষে আর সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি।’

এদিকে যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে রেলওয়ে পুলিশ। যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াতের বিষয়ে বিমানবন্দর রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুজিবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রীদের তুলনায় নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা অতি সামান্য। আর সামান্য জনবল দিয়ে হাজার হাজার যাত্রী নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’

এরপরও তারা যতদূর পারছেন যাত্রীদের বোঝাচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি না নিতে। তারপরও যদি কেউ ঝুঁকি নেয় সেক্ষেত্রে পুলিশের কিছু করার নেই বলেও জানান তিনি।

সারাবাংলা/এসজে/এমও

ঈদ ঈদযাত্রা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ট্রেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর