ঈদের ছুটিতে ভিড় বাড়ছে সিনেমা হলে
৬ জুন ২০১৯ ২১:৩০
ঢাকা: বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কই ছোট হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে শিশু পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো বিনোদন কেন্দ্রগুলোও। ফলে ঈদের ছুটিতে রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষ এসে ভিড় করছেন সিনেমা হলে।
মতিঝিল থেকে একটু এগিয়েই টিকাটুলির মোড়ে অভিসার সিনেমা হল। ঈদের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, শাকিব খান ও ববি অভিনীত ‘নোলক’ ছবিটি চলছে সিনেটা হলটিতে। দর্শক সমাগম সেখানে বেশ। হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সবগুলো শো হাউজফুল না গেলেও এখানে সন্ধ্যা অবধি দর্শকের উপস্থিতিতে তারা অসন্তুষ্ট নন। আর দর্শকদেরও কাউকে টিকিট না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়নি। হলের ভেতরে দর্শকদের প্রতিক্রিয়াও বেশ ইতিবাচক।
অভিসারের টিকিট বিক্রেতা রাশেদ ও রাসেল বলেন, এ বছর সিনেমার বাজার একটু মন্দা গিয়েছে। সে তুলনায় ঈদের টিকিট বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। দর্শকেরা বেশ আনন্দের সঙ্গেই সিনেমা দেখছে।
ওয়ারী থেকে সিনেমা দেখতে আসা তাবাসসুম রহমান মিরা বলেন, পুরনো ঢাকায় এখন আর দেখার মতো কোনো জায়গা নেই। তাই সপরিবারে সিনেমা দেখতে এলাম। বলা যায়, ঈদের দ্বিতীয় দিনে এসে কিছুটা সময় বেশ ভালোই কাটলো আমাদের।
মধুমিতা সিনেমা হলের আঙ্গিনাতেও দর্শকদের ভিড় কম নয়। এই হলে চলছে শাকিব-বুবলি অভিনীত ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিটি। আর এর প্রতিটি শো-ই ছিল হাউজফুল। অনেক দর্শককে টিকিট না পেয়ে ফিরেও যেতে দেখা গেছে বলে জানালেন হল কর্তৃপক্ষ।
ঈদে ‘পাসওয়ার্ড’ আর ‘নোলক’ ছাড়াও মুক্তি পেয়েছে ‘আবার বসন্ত’ সিনেমাটি। রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার সিনেমাস ও বলাকা সিনেমা হলে দেখানো হচ্ছে তারিক আনাম খান ও স্পর্শিয়া অভিনীত ছবিটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছবিটি দেখতে এসব হলেও ভালো লোক সমাগম হয়েছে।
স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘জন উইক ৩’ ছবিটি দেখতে এসেছিলেন মাহেরুখ পারভীন। পরে কোনো কারনে মত বদলে অনন্য মামুন পরিচালিত ‘আবার বসন্ত’ ছবিটি দেখেছেন। মাহেরুখ বলেন, ছোট ছোট কিছু ভুল থাকলেও ছবিটি সুন্দর। আমাদের সমাজের ভেতরকার গল্পই দেখানো হয়েছে এই ছবিতে। আমি যদিও বাংলা সিনেমার দর্শক না, তবে এটা বলতে পারি, ঈদে এরকম ছবি আরও আসা উচিত, যেন দর্শকেরা প্রেক্ষাগৃহে এসে সময় কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।
এদিকে, প্রেক্ষাগৃহ ছাড়াও শহরের মানুষেরা ঈদের ছুটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, টিএসসি, কার্জন হল ও বুয়েট ক্যাম্পাসে এসে সময় কাটিয়েছেন। এসব এলাকায় বেশিরভাগ দর্শনার্থীরা এসেছিলেন সপরিবারে। সারাবছর ক্লাস-পরীক্ষা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে ঢাবি-বুয়েট ক্যাম্পাস উত্তপ্ত থাকলেও ঈদের সময় বেশ নির্জন হয়ে পড়ে। ফলে ছুটির দিনটিতে এখানে মানুষেরা ঘুরেছেন অনেকটা বনভোজনের আমেজে।
জাতীয় জাদুঘর, শিল্পকলা একাডেমী ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের ভিড়ও ছিল লক্ষণীয়। জাতীয় জাদুঘরের সামনে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমানা মোর্শেদের ভাষ্য, স্কুল-টিউশনের জন্য এর আগে কখনো জাদুঘরে আসা হয়নি। আজকেই প্রথম মা-বাবার সঙ্গে এখানে এসেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখছি। সবকিছু খুব সুন্দর ও ছিমছাম। ছুটি পেলে একবার বন্ধুদের সঙ্গেও এখানে আসতে চাই।
সারাবাংলা/টিএস/টিআর