রাতে মায়ের পাশে ঘুম, ভোরে লাশ মিলল ডোবায়
৭ জুন ২০১৯ ২০:৩৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বাড়ির পাশে ডোবা থেকে ১৪ বছরের এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরী রাতে মায়ের পাশে ঘুমিয়েছিল। ভোরে তাকে বিছানায় না পেয়ে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজি করে ডোবা থেকে তার লাশ তুলে আনে। এসময় তার হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছে।
শুক্রবার (৭ জুন) ভোরের দিকে আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের খুরুশকুল গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল দিয়ে এক তরুণকে হেঁটে যেতে দেখে স্থানীয় জনতা তাকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে।
লিমা আক্তার (১৪) নামের ওই কিশোরী জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের খুরুশকুল গ্রামের ছকিনার বাপের বাড়ির মৃত আহমদ হোসেনের মেয়ে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া আনোয়ারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইকরামুজ্জামান সারাবাংলাকে জানান, লিমা কোরিয়ান ইপিজেডে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে তার খুন হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
ইকরামুজ্জামান বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে লিমা নিজের ঘরে মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। ভোর ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে তার মা হঠাৎ জেগে দেখেন, মেয়ে পাশে নেই। তখন তিনি দরজা খোলা দেখতে পান। চিৎকার দিলে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও প্রতিবেশীরা জেগে ওঠেন। তারা বাড়ির পাশের ডোবা থেকে লিমার লাশ এবং তার গায়ে থাকা কিছু স্বর্ণালঙ্কার ও একটি সিমবিহীন মোবাইল সেট উদ্ধার করেন।’
এসআই ইকরামুজ্জামান বলেন, স্থানীয়দের দাবি, লাশ উদ্ধারের সময় মেয়েটির হাত-পা বাঁধা ছিল। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন। আমরা গলায় ব্লেডের দাগের মতো কয়েকটি দাগ ও কয়েকটি জায়গা ফোলা দেখতে পেয়েছি। তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তদন্তে সবকিছু বেরিয়ে আসবে।
তিনি আরও জানান, ভোরে লাশ উদ্ধারের সময় ডোবার পাশ দিয়ে এক তরুণকে হেঁটে যেতে দেখে স্থানীয়রা তাকে ধরে রশি দিয়ে বেঁধে গণপিটুনি দেয়। এতে ওই যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
আটক তরুণের নাম মো. জামাল (২২)। স্থানীয়রা জামালকে মাদকাসক্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে বলে তিনি জানান।
লিমার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন এসআই ইকরামুজ্জামান।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর