মার্কিন শুল্ক এড়াতে সীমান্তে কঠোর হবে মেক্সিকো
৮ জুন ২০১৯ ১৬:৪০
মেক্সিকোকে পণ্যে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সেই শুল্ক এড়াতে মেক্সিকো থেকে মার্কিন সীমান্তে অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে মেক্সিকো ‘অভূতপূর্ব পদক্ষেপ’ নিয়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলছেন, এর মাধ্যমে দুই দেশ একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। যে কারণে ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ আমেরিকা আর মেক্সিকান পণ্যে শুল্ক আরোপ করবে না।
শনিবার (৮ জুন) টুইটারে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে সিরিজ টুইটে এই চুক্তির তথ্য জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
টুইটে ট্রাম্প লিখেছেন, আমি এটা জানাতে পেরে আনন্দিত যে দ্বিপাক্ষিক একটি চুক্তি সইয়ের সম্মত হয়েছে আমেরিকা ও মেক্সিকো। আমাদের পক্ষ থেকে সোমবার (১০ জুন) মেক্সিকোর ওপর যে বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করার কথা ছিল, তা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হলো। এর বদলে আমাদের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে মেক্সিকো থেকে অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে দেশটি কঠোর পদক্ষেপ নেবে। মেক্সিকো থেকে অবৈধভাবে অভিবাসীদের যে ঢল, তা কমাতে বা দূর করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করবে। ধন্যবাদ।
বিবিসির খবরে বলা হয়, মেক্সিকোর পক্ষ থেকেও এই চুক্তির বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারসেলো এবরার্ড এক টুইটে জানান, তিন দিনের টানা দরকষাকষির পর তারা এই চুক্তির শর্তগুলোতে একমত হয়েছেন।
এর আগে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে না পারলে মেক্সিকান পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হবে, যা প্রতিমাসে বাড়বে। সোমবার থেকে নতুন এই শুল্ক কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তবে তার এমন ঘোষণার বিষয়ে তার দলের কোনো নেতাও অবহিত ছিলেন না।
গত ফেব্রুয়ারিতেও তিনি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। অনিবন্ধিত অভিবাসীদের ঢল সীমান্তে যে সংকট তৈরি করছে, তা ঠেকাতে জরুরি অবস্থা জারি প্রয়োজনীয় ছিল বলে জানান তিনি।
কী আছে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো চুক্তিতে?
যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্তে অভিবাসী ও মানব পাচারকারীদের ঠেকাতে মেক্সিকো ‘অভূতপূর্ব’ পদক্ষেপ নেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের সন্ধানে আসা নাগরিকদের মেক্সিকোতে গ্রহণ করা এবং তাদের দাবি যাচাই-বাছাই বন্ধের যে দাবি মার্কিনিদের ছিল, তা পূরণ হয়নি বলে জানা গেছে।
দুই দেশের মধ্যে সই হতে যাওয়া চুক্তিতে মেক্সিকো সোমবার থেকে সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করবে। এছাড়া মেক্সিকোর দক্ষিণ সীমান্তে মোতায়েন করা হবে বাড়তি ছয় হাজার সৈন্য। আর মানবপাচার রোখে গুয়াতেমালা ‘সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ’ নেবে।
এদিকে, চুক্তির আওতায় পর্যালোচনার অপেক্ষায় আশ্রয়প্রার্থীদের মেক্সিকোতে ফেরত পাঠাতে কর্মসূচি সম্প্রসারিত করবে আমেরিকা। এছাড়া সীমান্ত নিরাপদ রাখতে ‘দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্পর্ক শক্তিশালী’ করতে তথ্য শেয়ারিংসহ সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলবে এবং আগামী ৯০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া হবে।
চুক্তি প্রসঙ্গে মারসেলো এবরার্ড সাংবাদিকদের বলেন, এই চুক্তিকে দুই দেশের জন্যই সুষম বলে মনে করছেন তিনি। কারণ আমেরিকা বিভিন্ন ধরনের শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দিয়ে আলোচনা শুরু করলেও আমরা মাঝামাঝি একটি অবস্থানে এসে একমত হয়েছি।
সারাবাংলা/টিআর