এবার রাজবাড়ীতে স্কুলছাত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা
৮ জুন ২০১৯ ১৭:৪৯
রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে জোর করে অশ্লীল ছবি তুলে ব্লাকমেইলের পর দাবি করা টাকা না পেয়ে এক স্কুলছাত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা ফজলুর রহমান বাদী হয়ে শিল্পী বেগম নামে এক নারীসহ অজ্ঞাত আরও চারজনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করেছেন। শিল্পী বেগম একই গ্রামের জাহাঙ্গীর মিজির স্ত্রী। পুলিশ মামলার আলামত হিসেবে ওই স্কুলছাত্রীর পুড়ে যাওয়া কামিজ ও সালোয়ার জব্দ করেছে। মেয়েটি স্থানীয় খানখানাপুর তমিজ উদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি জানান, এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা দাযের করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দুইটি টিম মাঠে কাজ করছে এবং আসামি ধরার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
স্কুলছাত্রীর মা নাসিমা বেগম বলেন, ‘ঈদের দিন (বুধবার) প্রতিবেশী শিল্পী বেগম আমার মেয়ের সঙ্গে অন্য ছেলের সম্পর্ক ও আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করে। আমার মেয়ে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে ক্ষিপ্ত হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আমি ঘরের মধ্যে ঘুমাচ্ছিলাম। এ সময় ছোট মেয়ের চিৎকারে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আমি ঘুম থেকে উঠে ছোট মেয়েকে বড় মেয়ের কথা জিজ্ঞাসা করতেই সে জানায় বোরখা পড়া দুইজন লোক তাকে তুলে নিয়ে গেছে। তখন আমিও চিৎকার করতে থাকি। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অনেক খোঁজাখুজির পর ঘরের পিছনের পাটক্ষেত থেকে মেয়েকে উদ্ধার করা হয়।’
স্কুলছাত্রীর প্রতিবেশী সাথী সরকার বলেন, ‘চিৎকার চেঁচামেচিতে আমরাও এগিয়ে গিয়ে স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করি। তার মাথায় আঘাতের চিহ্নসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত ছিল এবং গায়ের জামা-কাপড় ছেঁড়া ছিল।’
স্কুলছাত্রীর বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সারাবাংলাকে বলেন, পহেলা বৈশাখের দুইদিন আগে বাজার থেকে ফেরার পথে শিল্পী নামে এক প্রতিবেশী আমার বোনের পথ আটকায়। এরপর বখাটে ছেলেদের দিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং জোড়পূর্বক ছবি তোলে। পরবর্তী সময়ে ওই ছবি দিয়েই ব্লাকমেইল করে বোনের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বৃহস্পতিবার দুপুরে আমার বোনকে তারা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পাটক্ষেতের মধ্যে হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে তার গোংড়ানির শব্দে লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ সময় তারা বোনের শরীরে কেরোসিন ঢালতে না পেরে শুধু আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পাটক্ষেত ভেজা থাকায় আমার বোন গড়াগড়ি দিলে আগুন নিভে যায়। এরপরও তার শরীরের কিছু অংশ পুড়ে যায়।’
সারাবাংলা/এমএইচ/প্রমা