Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কৃষিশুমারির তথ্য সংগ্রহ শুরু


৯ জুন ২০১৯ ১৬:৩৫

ঢাকা: অর্থনীতিতে কৃষির প্রকৃত অবদান নির্ণয়ে কৃষিশুমারির জন্য মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। শুমারির মাধ্যমে শস্য, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ খাতের পর্যায়ক্রমিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এটি চলবে ২০ জুন পর্যন্ত।

রোববার (৯ জুন) রাজধানীর আগারগাঁও এর পরিসংখ্যান ভবনে কবুতর ছেড়ে ও বেলুন উড়িয়ে শুমারির উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম, এ, মান্নান। এরপর র‌্যালী ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. কৃষ্ণা গায়েন। এছাড়া, অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম, বিকাশ কিশোর দাস, উপমহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং প্রকল্প পরিচালক মো. জাফর আহম্মদ খানসহ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মানুষের যেমন স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করা প্রয়োজন, তেমনি অর্থনীতির স্বাস্থ্য জানতে কৃষিশুমারিসহ অন্যান্য শুমারি পরিচালনা করা হয়। দেশের প্রথম নাগরিক মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং প্রথম খানা (পরিবার) মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাসভবনে আমি নিজে গিয়ে সন্ধ্যায় গণনার কাজ শুরু করব। এই শুমারির মাধ্যমে শুধু ধান ও পাটই নয়, হাস, মুরগী, গরু, ছাগল সব কিছুরই তথ্য পাওয়া যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, আগামী তিন মাসের মধ্যেই প্রাথমিক ফলাফল এবং ৬ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ছয়টি প্রধান ফসল (আউশ, আমন, বোরো, গম, আলু ও পাট) এবং ১২০টি অপ্রধান ফসলের হিসাব প্রস্তুত করছে। অতীতে কৃষিশুমারিতে শুধু অস্থায়ী ফসলের হিসাব নেয়া হতো। এবার শুমারিতে অস্থায়ী ফসলের পাশাপাশি স্থায়ী ফসলের যেমন, বনজ ও ফলদ বৃক্ষ ও এর উৎপাদন সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প পরিচালক জানান, শুমারিটি পরিচালনার মাধ্যমে ভূমির ব্যবহার, চাষযোগ্য জমির প্রকার ও ফসলের বৈচিত্র্য, কৃষি উপকরণ, সেচ যন্ত্রপাতি সম্পর্কিত পরিসংখ্যান, কৃষি বিষয়ক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে উপাত্ত সরবরাহ, কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্য সরবরাহ করা হবে। এছাড়া, জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান নির্ণয় এবং কৃষি খানা ও প্রতিষ্ঠানের রেজিস্টার তৈরি করা হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কৃষিশুমারির প্রস্তুতি হিসেবে এরইমধ্যেই দ্বিতীয় জোনাল অপারেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে জোনের গঠন ও জোনাল অফিসারের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া জিও-কোড তালিকা, মৌজা ও মহল্ল্যা ম্যাপ যাচাই পূর্বক হালনাগাদকরণ, গণনা এলাকা নির্ধারণ ও ম্যাপে তা যাচাই বাছাই করে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও অনেক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। তার আগে প্রথম জোনাল অপারেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে কোনো ভুলক্রুটি আছে কিনা তা যাচাই বাছাইয়ের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে জোনাল অপারেশন করা হয়। শুমারির উদ্যোগটি বাস্তবায়নে ‘কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ) শুমারি-২০১৮’ নামের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩৪৫ কোটি টাকা।

১৯৬০ সালে প্রথমবারের মতো নমুনা আকারে কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর, ১৯৯৬ সালে এবং ২০০৮ সালে কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কৃষিশুমারি। এতে পল্লী এলাকায় গড়ে ২৪০টি খানা (পরিবার), পৌরসভা এলাকায় গড়ে ৩শটি খানা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় গড়ে সাড়ে ৩শ খানা নিয়ে একটি গণনা এলাকা গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি গণনা এলাকায় তথ্য সংগ্রহের জন্য স্থানীয় গণনাকারি নিয়োগ করা হয়েছে। এভাবে, সারা দেশে ১ লাখ ৪৪ হাজার ২১১ জন গণনাকারি কাজ করবে। তাদের কাজ পরিদর্শনের জন্য স্থানীয়ভাবে ২৩ হাজার ১৬৫ জন সুপারভাইজার কাজ করবে। এছাড়া, শুমারি কাজের সুবিধার্থে ৬৪টি জেলাকে ৯০টি শুমারি এলাকায় ভাগ করে বিবিএস এর ৯০ জন কর্মকর্তাকে জেলা শুমারি সমন্বয়কারি এবং ৮টি বিভাগকে ১০টি শুমারি বিভাগে ভাগ করে বিবিএস এর ১০ জন কর্মকর্তাকে বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারি হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জাতীয় শুমারি সমন্বয়কারি একজন এবং প্রধান শুমারি সমন্বয়কারি একজন দায়িত্ব পালন করবেন।

সারাবাংলা/জেজে/জেএএম

কৃষিশুমারি পরিসংখ্যান ব্যুরো

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর