Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তিস্তা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই: প্রধানমন্ত্রী


৯ জুন ২০১৯ ১৮:১৯

ঢাকা: ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন করা গেলে পানির জন্য আর কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না বাংলাদেশকে।

রোববার (৯ জুন) বিকলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ত্রিদেশীয় সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিক ও দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। জাপান, সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ডে ১১ দিনের সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক নরেন্দ্র মোদির জয় ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি জানতে চান, গত বছর শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, তিস্তায় সুবাতাস বইবে। নতুন করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই ইস্যুর কী হবে জানতে চান ওই সাংবাদিক।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মেরিটাইম বাউন্ডারির মতো কঠিন সমস্যার সমাধান করেছি। ছিটমহল বিনিময় করেছি। অথচ এসব নিয়ে পৃথিবীর বহু দেশে যুদ্ধ বেঁধে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে এসবের সমাধান করেছি। বহু কঠিন সমস্যা সমাধান করেছি। পানির জন্য কারও মুখাপেক্ষী থাকতে হবে না, ডেল্টা প্ল্যান করেছি। পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করলে, পানি পানি করে কারও দিকে চেয়ে থাকতে হবে না। তাই তিস্তা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই।’

ভারত থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমাদনি করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরও নেবো। সাবস্টেশন হচ্ছে, দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে, বাকি আছে যেটুকু, ২০২১ সালের মধ্যে সেটাও হয়ে যাবে। তখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ যাবে। ২০২৪ সালের মধ্যেেআমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

যারা ফিনল্যান্ড বা বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের বিশাল এলাকা। অত্যন্ত রিসোর্সফুল জায়গা। আমাদের জায়গা তো অনেক কম। অনেকে তুলনা করেন। কিন্তু যারাই করুক, তাদের মাথায় রাখা উচিত, বাংলাদেশের মতো এই ভূখণ্ড দিয়ে ১৬ কোটি মানুষকে বসিয়ে দিই? কতটুকু সুস্বাস্থ্য আর কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারবে তারা?’

এসময় সরকারের শিশু মৃত্যুহার, মাতৃ মৃত্যু হার, দারিদ্র কমানো, নারী ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মাত্র ৫৫ হাজার বর্গমাইল এলাকায় ১৬ কোটি মানুষের দেশে যে কাজগুলো দক্ষতার সঙ্গে করতে পেরেছি সেটুকু দিয়ে তারা পারবে কি না, এই প্রশ্ন করা দরকার।’

গত ২৮ মে জাপান দিয়ে ত্রিদেশীয় এই সফর শুরু করেন শেখ হাসিনা। পরে সেখান থেকে সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ড যান তিনি। সফরে তৃতীয় ও শেষ দেশ ফিনল্যান্ড থেকে শনিবার (৮ জুন) সকালে দেশে পৌঁছান তিনি।
ত্রিদেশীয় এই সফরের শুরুতেই জাপানের টোকিওতে ‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য জাপানের সঙ্গে আড়াইশ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তা চুক্তি সই হয় তার সফরে।
জাপান সফর শেষে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্সের (ওআইসি) চতুর্দশ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ৩০ মে শেখ হাসিনা সৌদি আরবে যান। সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর পবিত্র ওমরাহ পালন করেন তিনি, জিয়ারত করেন মহানবীর (স.)-এর রওজা।

সৌদি আরব থেকে গত ৩ জুন ফিনল্যান্ড যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ৪ জুন দেশটির প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তোর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরদিন ৫ জুন অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ ও ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগ তার সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী সেই অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।

সারাবাংলা/টিআর/এসএমএন

তিস্তা চুক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর ত্রিদেশীয় সফর প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর