Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ফরমায়েশি লেখা নেই, তাই ওই সম্পাদক লিখতে পারছেন না’


৯ জুন ২০১৯ ১৯:৫৪

ঢাকা: সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাংবাদিক বা গণমাধ্যমকে কোনো কিছু লিখতে বাধা দেওয়া হয়নি বা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বরং ফরমায়েশি লেখায় অভ্যস্ত দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের ওই সম্পাদক এখন ফরমায়েশি লেখা না পাওয়ার কারণে লিখতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারও লেখায় আমি বাধা দেইনি। উনি যত খুশি লিখবেন, লিখছেন তো। হঠাৎ বলে ফেললেন, তিনি লিখতে পারছেন না। আমি তো মনে করি তিনি ফরমায়েশি লেখা পাচ্ছেন না। তিনি যদি চান যে ডিজিএফআই তাকে লেখা সাপ্লাই দিক, তিনি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুক। তখন তারা সাপ্লাই দেবে। এর বাইরে আমি কী বলব?

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- তিস্তা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই: প্রধানমন্ত্রী

রোববার (৯ জুন) বিকেলে জাপান, সৌদি আরব ফিনল্যান্ডে ১১ দিনের ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিকেল ৫টায় এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

সম্প্রতি জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের একজন জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক অভিযোগ করে বলেছেন, বাংলাদেশে তিনি তার মতো করে কলাম লিখতে পারছেন না, নানা ভয়ে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে গণমাধ্যমে প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ কোনো দিকনির্দেশনা রয়েছে কি না— সংবাদ সম্মেলনে জানতে চান একজন সাংবাদিক।

আরও পড়ুন- ‘হুমকি সবসময় আসে, সব জানিয়ে মানুষকে ভীত করতে চাই না’

এসময় প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, ‘যে সম্পাদক এই কথা বলছেন, যদি সত্যিই এমন কোনো পরিস্থিতি হতো, তাহলে তিনি কি এই কথাটুকুও বলার সাহস পেতেন যে তিনি লিখতে পারেন না? যদি তার ওপর সত্যি কোনো চাপ থাকত, তাহলে এই কথাটাই বলার সাহস পেতেন কি না— আমার প্রশ্ন সেখানে।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, আপনি যে কোনো একজন সম্পাদকের কথা বলছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থাকলে তাদের খুব একটা ভালো লাগে না। তাদের ভালো লাগে যদি কোনো অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থাকে। যেমন— ইমার্জেন্সি সরকার হোক বা মিলিটারি সরকার হোক। এরকম কোনো প্রক্রিয়া থাকলে তারা ফরমায়েশি লেখা লিখতে পারে।

আরও পড়ুন- সংস্থাগুলোই চায় না রোহিঙ্গারা ফিরে যাক: প্রধানমন্ত্রী

তিনি আরও বলেন, আমি বুঝতে পারছি, আপনি কার কথা বলছেন। একবার একটি টেলিভিশনের টকশোতে তিনি উপস্থিত হয়ে বলেছিলেন, কোনো মিথ্যা নিউজ দেওয়া হয়েছিল বলে তাকে ধরেছিল কেউ। তখন তিনি বলছিলেন, ‘আমি কী করব? ডিজিএফআই যেটা আমাকে দিয়েছে, আমি সেটাই লিখে দিয়েছি।’

এই ঘটনার সঙ্গে ওই সম্পাদকের ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের সংযোগসূত্র উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার এই কথার অর্থ হলো— এখন ডিজিএফআই তাকে লিংক দিচ্ছে না। তার জন্য তিনি লিখতে পারছেন না। তিনি তো বলছেন, ফরমায়েশি লেখা লিখতে পারেন। কিন্তু আমরা তো ডিজিএফআইকে দিয়ে কোনো তথ্য দেওয়াচ্ছি না। কাকে কী লিখতে বলতে হবে, কাকে কী বলতে হবে— এগুলো তো আর ডিজিএফআই এখন কাউকে বলে দেয় না। সে কারণেই হয়তো তিনি নিজেই লিখতে পারছেন না। তার মানে কোনো ফরমায়েশি লেখা না থাকলে তিনি লিখতে পারেন না। আমি এর বাইরে আর কিছু বুঝতে পারছি না।’

আরও পড়ুন- জুলাইয়ে চীন সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী

কখনো গণমাধ্যমের সমর্থন পাননি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উনি লিখুন না কেন, যা খুশি তাই লিখে যাক। লিখে তো যাচ্ছেই। আমি কি বলতে পারব আমি কোনোদিন এইসব পত্রিকার কোনো সহযোগিতা পেয়েছি? জীবনেও না। আর বাংলাদেশে আসার পর থেকে কয়টা পত্রিকা ছিল আমাদের পক্ষে? পারলে সবাই বিরুদ্ধেই লিখেছে। আমি ওটাতেই অভ্যস্ত। আঘাত পেতে পেতে আর ওতে আমার কিছু আসে যায় না।’

শেখ হাসিনা বলেন, আমি সবসময় মনে করি আমার বিবেক যদি ঠিক থাকে যে আমি সঠিক আছি, সঠিক বলছি, সঠিক করছি, সেটাই আমার কাছে বড়। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি, আমি যা কাজ করি দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করি। এই বিশ্বাসটা যদি আমার থাকে, তাহলে কে ভালো বললো আর কে মন্দ বললো, এটা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। আমার এখানে বসে আমি যেটা দেখতে পাব, সেটা তো সবাই দেখতে পাবে না। দেখতে পেলে তারা তো এখানেই থাকত, তাদের জায়গায় আমি থাকতাম।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পাশে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।

প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই সংবাদ সম্মেলন। খানিকটা অসুস্থ শরীর নিয়েও সংবাদ সম্মেলনে ধৈর্য ধরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

আরও পড়ুন-

ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু

‘নিজের বিমানেই যাব, মরলে মনে হবে দেশের মাটিতেই মরেছি’

সারাবাংলা/টিআর

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর