আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে আসা যাত্রী ও পণ্যে ঝুঁকি বিশ্লেষণের উদ্যোগ
১১ জুন ২০১৯ ১৩:০১
ঢাকা: ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য সরকার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। যা গতবারের চেয়ে ৩৮ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা বেশি। যেহেতু লক্ষ্যমাত্রা প্রতিবছরই বড় হচ্ছে, তাই কর আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নিতে হচ্ছে নানা পদক্ষেপ।
এনবিআর নতুন যেসব পদক্ষেপের বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, এর মধ্যে একটি হচ্ছে রাজস্ব ফাঁকি রোধে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে আসা যাত্রী ও আমদানি পণ্যের রিস্ক অ্যানালাইসিস বা ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা। আগামী অর্থবছর থেকেই ‘এপিআই’ (অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন) ও ‘পিএপি’ (প্রি-অ্যারাইভেল প্রসেসিং) পদ্ধতি চালু করতে চায় এনবিআর। এর আওতায় যাত্রী আসার আগেই এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যাত্রীর তথ্য নেওয়া হবে। যাত্রীদের নামের রেকর্ড (পিএনআর) সিস্টেমও চালু করা হবে। এর মাধ্যমে যাত্রীর রিস্ক এনালাইসিস করা হবে।
এছাড়া আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে আসার পর যাত্রীদের গ্রীন চ্যানেল ও রেড চ্যানেল সম্পূর্ণরূপে চালু করার পরিকল্পনাও আগামী অর্থবছর থেকে বাস্তবায়ন করা হবে। পণ্যের ক্ষেত্রেও একই ধরণের পদ্ধতি চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি আইনী কাঠামোর খসড়া তৈরি করেছে এনবিআর। পণ্য বন্দরে আসার আগেই বা আমদানির আগেই রিস্ক এনালাইসিস করে তার শুল্কায়ন শেষ করা হবে। ফলে, রাজস্ব ফাঁকি রোধের পাশাপাশি পণ্যও দ্রুত ছাড় করা সম্ভব হবে।
কৃষকের উৎপাদিত ধান-চালের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে চাল আমদানিতে সর্বোচ্চ শুল্ক হার আগামী অর্থবছরেও অব্যাহত থাকবে। চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাচলে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে নজর দেওয়া হচ্ছে। কোনো হাসপাতাল বা ডায়াগনোস্টিক সেন্টার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাচলের জন্য বিশেষ সেবা সুবিধা না রাখলে প্রযোজ্য করের ৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর আরোপ করা হবে।
বেশ কিছু জায়গায় কর অব্যাহতি ও কর অবকাশ প্রত্যাহারের বিষয়ে এনবিআর এর প্রতিবেদন হচ্ছে, অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ (পিপিপি)-এর আওতায় নির্মিত ন্যাশনাল হাইওয়ে, এক্সপেসওয়ে, ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এবং সাবওয়েসহ অবকাঠামো খাতকে শর্তসাপেক্ষে যে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে আগামী অর্থবছরও তা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া রাজনৈতিক নির্দেশনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প যেমন- রূপপুর, হাইটেক পার্ক ভ্যাটের আওতামুক্ত থাকবে। পাশাপাশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত অগ্রাধিকার খাতগুলোর জন্য কর প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হবে।
রাজস্ব আদায় বাড়াতে আগামী বাজেটে ভ্যাট ব্যবস্থার পদ্ধতি সহজ করা ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাক্ষমতা কমিয়ে আনার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে এনবিআর। এছাড়া, ‘ভ্যাট অন-লাইন প্রজেক্ট’ এর আওতায় অন-লাইনে ভ্যাট দাখিল, ‘ভ্যাট অন-লাইন সার্ভিস সেন্টার’ স্থাপন, ই-লার্নিং ও ‘ভ্যাট হেল্প লাইন’ চালু করা হয়েছে। এখন থেকে ‘১৬৫৫৫’ নম্বরে ফোন দিলে ভ্যাট বিষয়ক যে কোনো তথ্য বা প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে।
আগামী অর্থবছরে, ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা।
সারাবাংলা/জেএএম