Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গৃহহীন মানুষের তালিকায় কোটিপতিরাও!


১৫ জুন ২০১৯ ০৭:০৩

সিলেট: সরকারের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচি ‘কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা)’র প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের তালিকায় সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় নাম লিখিয়েছেন লাখপতি-কোটিপতিরাও।

২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে জেলার শাল্লা উপজেলায় কাবিটা প্রকল্পে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণের উপকারভোগীদের নামের তালিকায় এমন তথ্য জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গোটা জেলা জুড়ে এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানান আলোচনা সমালোচনা। জেলা প্রশাসনও পড়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে।

বিজ্ঞাপন

ওই উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা যাচাই-বাচাই ছাড়াই এমন তালিকা অনুমোদন করায় তারাও দায়িত্বহীনতার বিষয়টি এড়াতে পারছে না।

জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে কাবিটা কর্মসূচির বিপরীতে শাল্লা উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও)’র দফতর ওই উপজেলার ১৭টি গৃহহীন পরিবারের জন্য ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা বরাদ্দ করে।

নিয়ম অনুযায়ী যথাযথ যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে উপকারভোগীদের তালিকা করার কথা। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা তা না করেই গত ১৩ মে তালিকাটি অনুমোদন করেন।

উপজেলাবাসীর অভিযোগ, অনুমোদিত সেই তালিকায় ১৭টি উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে কেবল পাঁচটি পরিবার ছাড়া বাকীরা লাখপতি। কেউ কেউ কোটিপতিও আছেন।

উপকারভোগীদের তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন, উপজেলার ১নং আটগাঁও ইউপি’র ফরিদপুরের মামুদনগর গ্রামের আবু নছর মিয়ার ব্যবসায়ি ছেলে মতিউর রহমান। তিনি ওই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম আজাদের জামাতাও বটে। এছাড়া একই গ্রামের মনোয়ার হোসেনের ছেলে ইয়াহিয়া আলম, উজান ইয়ারাবাদ গ্রামের উকিল আলীর ছেলে সালাম মিয়া ও ইউপি সদস্য বশির মিয়ার আপন ভাই আব্দুল হামিদ। এরা প্রত্যেকেই এলাকায় ধনী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। আরও আছেন সিলেট জেলার বাহাড়া ইউনিয়নের ডুমরা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অভিমূন্য দাসের ছেলে চিন্ময় দাস, মেঘনাপাড়া গ্রামের প্রাণধন দাসের স্ত্রী শ্রীমতি বালা দাস, ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের আবু তাহেরের স্ত্রী ইমরানা বেগমও।

বিজ্ঞাপন

এই অনিয়মের বিষয় জানিয়ে সম্প্রতি স্থানীয় অসহায় নারী মমিনা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

বিষয়টি সম্পর্কে সিলেট গণদাবী পরিষদের সুনামগঞ্জ জেলার আহ্বয়াক কমিটির সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, এমন তালিকা প্রণয়ন আর অনুমোদনের পর খুব সহজেই বোঝা যায় যে ওই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পিআইও মাঠ পর্যায়ে না গিয়ে অফিসে বসে শুধু শুধু ফাইল ওয়ার্ক করে নিজেদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।

সঠিকভাবে যাচাই না করার কথা স্বীকার করেন শাল্লা উপজেরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, তালিকায় কিছু ত্রুটি হয়েছে, এটা ঠিক। তবে দ্রুত যাচাই-বাছাই করে নতুন করে তালিকা প্রণয়ন করা হবে।

তবে এই বিষয়ে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেনের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সারাবাংলা/এআই/টিএস/এসএমএন

উপজেলা পরিষদ কাবিটা সুনামগঞ্জ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর