ঈদযাত্রায় ২৫৬টি দুর্ঘটনায় ২৯৮ জনের মৃত্যু
১৫ জুন ২০১৯ ১২:০৭
ঢাকা: এবারের ঈদযাত্রায় সারাদেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথের ২৫৬টি দুর্ঘটনায় ২৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮৬০ জন।
শনিবার (১৫ জুন) রজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি মিলনায়তনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন এই তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রার ১২ দিনে ২৪৭ জনের মৃত্যু
গত ৩০ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ১৩ দিন সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল ৪০টি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক এবং আটটি অনলাইন পর্যবেক্ষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানান যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সদ্য বিদায়ী পবিত্র ঈদুল ফিতরে যাতায়াতে সারাদেশে ২৫৬টি দুর্ঘটনায় ২৯৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮৬০ জন। এরমধ্যে ২৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭৩ জন নিহত ও ৮৪৯ জন আহত হয়েছে।
বিগত ঈদের চেয়ে এবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো উল্লেখ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘গত বছরের ঈদের তুলনায় এবার দুর্ঘটনার হার কমেছে ১৯ দশমিক ঊনচল্লিশ শতাংশ। এছাড়া ঈদের লম্বা ছুটি, সড়ক উন্নয়ন ও মানুষের সচেতনতার কারণেই এই হার কিছুটা কম বলে মনে করছে সংগঠনটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নৌ-পথে বেশ কয়েকটি নতুন লঞ্চ বহরে যুক্ত হওয়া, রেলপথেও বেশ কয়েক জোড়া নতুন রেল ও বগি সংযুক্ত হওয়ায় এবং ঈদের লম্বা ছুটি থাকায় জনসাধারণ আগেভাগে বাড়ি পাঠানোর সুযোগ কাজে লাগানোর কারণে ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে।’
ঈদযাত্রায় মহাসড়কে মোটর সাইকেলকে নতুন আতঙ্ক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবছর মোট সংঘটিত ২৩২টি সড়ক দুর্ঘটনার ৭৬টি ঘটেছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষে, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩ শতাংশ। যেখানে মোট নিহতের ৩০ শতাংশ এবং মোট আহতের ১০ শতাংশ। অন্যদিকে পথচারীকে গাড়ী চাপা দেওয়ার ঘটনা প্রায় ৪৫ শতাংশ ঘটেছে। আগামী ঈদে এ দুটি বিষয় এড়ানো সম্ভব হলে এই দুর্ঘটনার প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’
সংবাদ সম্মেলনে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন সংগঠনটির মহাসচিব। সুপারিশে বলা হয়েছে, চালকের প্রশিক্ষণ, লাইসেন্স ইস্যু পদ্ধতি আধুনিকায়ন, যানবাহনের ফিটনেস প্রদান পদ্ধতি আধুনিকায়ন, রাস্তায় ফুটপাত-আন্ডারপাস-ওভারপাস নির্মাণ, জেব্রা ক্রসিং অংকন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও গবেষণা, ডিজিটাল ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ সড়ক নিরাপত্তায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে।
জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলকে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা, চালককে প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা, ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, ঈদযাত্রায় মোটর সাইকেল নিষিদ্ধকরাসহ ১০ দফা সুপারিশ উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া ও নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এজেডকে/জেডএফ /এমআই